( २४७ ) সপ্রমাণ করিয়াছেন যে, উচ্চপদ লাভ করিলেও তাহার কখন আত্মবিস্মৃতি সংঘটিত হয় নাই । শ্ৰীযুক্ত বাৰু কৈলাস চন্দ্র সিংহ ১২৮৯ সনের বান্ধব নামক পত্রিকার ৭৬ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন, “মুরাদআলি ও রাজবল্লভ ক্রর, নির্দয় ও স্বার্থপর ছিলেন। রাজকাৰ্য্যে প্রবৃত্ত হইয়াই তাহার। প্রজার সর্বনাশ করিয়া ধন সঞ্চয় করিতে লাগিলেন। পূৰ্ব্ব হইতেই মহাশয় যশোবন্ত সিংহ ঢাকার লেখামতের দেওয়ান পদে নিযুক্ত ছিলেন। তিনি মুরাদ অলি ও রাজবল্লভের আচরণে নিতান্ত ত্যক্ত হইয়া স্বীয় পদ পরিত্যাগ করিলেন। যশোবন্ত সিংহের কার্য্য পরিত্যাগে সেই ফুৰিবনীতদিগের অত্যাচার বৃদ্ধি পাইতে লাগিল। তৎকালে পুৰ্ব্ববঙ্গের যে অবস্থা হইয়াছিল তাহ স্মরণ করিলে হৃদয় বিদীর্ণ হয়। কি প্রজ, কি ভূম্যধিকারী, রাজবল্লভকে উৎকোচ দ্বারা সন্তুষ্ট রাখিতে না পারিলে কাহারও নিস্কৃতি ছিল না । এই সময় রাজবল্লভ জমিদারদিগের সর্বনাশ করিয়া জমিদারী সঞ্চয় করিতে লাগিলেন। ভাটি প্রদেশস্থ বোজরগ উমেদপুর পরগণ র্তাহার প্রথম ভূসম্পত্তি।” এই উক্তির সমর্থনে তিনি ষষ্ঠসংখ্যা নব্যভারত পত্রিকার ৫৭৫ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন,— “রাজবল্লভ কিরূপ অত্যাচারী ছিলেন, তাহ সমসাময়িক মুসলমান ইতিহাস লেখকগণ বিশেষরূপে লিপিবদ্ধ করিয়াছেন । বিখ্যাত ইতিহাস লেখক Major Stuart ( স্থার্ট সাহেব) সেই সকল ইতিবৃত্ত হইতে সার সংগ্ৰহ করিয়া তৎপ্রণীত বাঙ্গালার ইতিহাসে প্রকাশ করিয়া গিয়াছেন।” - রাজবল্লভের সমসাময়িক মুসলমান লেখকগণ যে সমস্ত ইতিহাস প্রণয়ন করিয়াছেন, তন্মধ্যে সায়র মোতাক্ষরীণ, রিয়াজুসেলাতিন, তারিফি মুজাফরী এবং চাহার গুলজার সমধিক প্রসিদ্ধ ও প্রামাণ্য।
পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/২৬০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।