( २७e ) কীৰ্ত্তিনারায়ণ, অনেক চেষ্টা করিয়া তাহাকে এই কাৰ্য্য হইতে বিরত করেন । দুই বৎসর এইরূপে অতিবাহিত হইলে, রাজা গঙ্গাদাস পরলোক গমন করিয়া শান্তিলাভ করিয়াছিলেন । এক্ষণ হইতে রাজবল্লভের পঞ্চম পুত্র রায় গোপালকৃষ্ণ সৰ্ব্বে সৰ্ব্ব৷ হইয়া পিতৃত্যক্ত জমিদারীর শাসনকার্যো প্রবৃন্ত হইলেন । তিনি গঙ্গাদাস অপেক্ষা অধিকতর সাহসী এবং কার্য্যদক্ষ ছিলেন । জমিদারীর শাসন ভার গ্রহণ করিবার অব্যবহিত পরেই, গোপালকৃষ্ণ সৈন্ত সংগ্ৰহ করিয়া কাৰ্ত্তিক পুরের ভূস্বামিগণের বিরুদ্ধে অস্ত্ৰধারণ করিলেন, এবং তাহাদিগকে যুদ্ধে পরাভূত করিয়া কাৰ্ত্তিকপুর মুজাবাদ পরগণার পুনরুদ্ধার সাধন করিলেন । এই যুদ্ধে যে সমস্ত শক্র সেন নিহত হইয়াছিল, তাহাদের ছিন্ন শির রাজনগরে আনীত হইয়া ভূগর্ডে প্রোথিত হইল, এবং সেই স্থলে জয়চিহ্ন স্বরূপ এক , দেবালয় নিৰ্ম্মাণ করিয়া, তিনি তন্মধ্যে রণদক্ষিণাকালী নামক দেবতামূৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠাপিত করিলেন। রাজবল্লভের উত্তর পুরুষগণ বলেন, লাল রামপ্রসাদ রাজবল্লভের জমিদারীর প্রধান কৰ্ম্মচারী ছিলেন, কিন্তু লাল। রামপ্রসাদের অতিবৃদ্ধ প্রপৌত্র সুলেখক শ্ৰীযুক্ত বাবু মানন্দনাথ রায় বলেন যে, তিনি রাজবল্লভের কোন কধ্যে নিযুক্ত ছিলেন না। আনন্দ নাথ বাবুর মতে তদীয় অতিবৃদ্ধ প্রপিতামহ প্রথমতঃ নবাব সরকারে ওহদাদার কার্য্য করিতেন, এবং পশ্চাৎ নেজামতের পেস্কারৗপদে উন্নীত হইয়াছিলেন। একমাত্র লাল রামপ্রদাদের উত্তর পুরুষগণ ব্যতীত যপসার ছয় হবেলার অধিকাংশ ব্যক্তিগণের নিকট এ সম্বন্ধে যাহ। অবগত হওয়া গিয়ছে, তদ্বার। নিশ্চয় প্রতীতি হয় যে, লাল। রম প্রসাদ রাজবল্লভের জমিদারীর প্রধান কায্যকারক ছিলেন । আঁযুক্ত টম্সন সাহেব রাজনগর পরগণার বাটোয়ারার কাযে নিযুক্ত হইয়া, রাজবল্লভের বিধবা পত্নীগণের মাসিক বৃত্তির নিমিত্ত বোর্ডে যে চিঠি প্রেরণ করেন, তাহা এই পুস্তকের পরিশিষ্ট্রে সন্নিবেশিত হইল। ঐ চিঠিতে যাহা লিখিত আছে, তদ্বারাও প্রমাণিত হইতেছে যে, লাল রামপ্রসাদ রাজবল্লভের জমিদারীর প্রধান কাৰ্য্যকারক ছিলেন। যপস গ্রামে লাল রামপ্রসাদ ধনে ও মানে সকবাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ আসনে আসীন ছিলেন, এবং তাহার উত্তর পুরুষগণ বহুকাল পর্য্যন্ত সে মৰ্য্যাদ। রক্ষা করিয়াছিলেন । ৰিধাতার বিড়ম্বমায় র্তাহারা এক্ষণে হৃতসৰ্ব্বস্ব এবং দরিদ্র তার কবলগত হইয়াছেন।
পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/২৭২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।