( ১১ ) অধিকতর উগ্র মূৰ্ত্তিতে জলপথগামী পথিক ও উপকুলবাসী মানবের হৃদয়ে বিষম ত্রাসের সঞ্চার করিতেছে। যাহারা স্বচক্ষে ঐ ধ্বংস দৃপ্ত নিরীক্ষণ করিয়াছেন তাহার রাজনগরবাসী লোকের তাৎকালিক অবস্থা সহজে হৃদয়ঙ্গম করিতে পারিবেন। সেই চিত্র অঙ্কিত করা এই দুৰ্ব্বল লেখনীর সাধ্যায়ত্ত নহে (১) যে সময় সেই মৰ্ম্মভেদী অঙ্ক অভিনীত হইতেছিল, তৎকালে শ্রীহট্ট নিবাসী সুপ্রসিদ্ধ জয়চন্দ্র ভট্ট রাজকবিরূপে রাজনগরে অবস্থান করিতেছিলেন। তিনি স্বচক্ষে ঐ দৃশু অবলোকন করিয়া আবেগপূর্ণহৃদয়ে যে বিষাদ সঙ্গীত রচনা করিাছিলেন, অদ্যাপি তাহা এতদ্দেশায় ভট্টকবিগণ স্বরসংযোগে গান করিতেছেন। করাল কালের কঠোর শাসনে বহুকাল হইল ঐ ভট্টকবি ইহুধাম পরিত্যাগ করিয়া অনন্তধামে চলিয়া গিয়াছেন। কিন্তু তাহার বিরচিত শোকগাথা এখনও শোতৃবর্গের মৰ্ম্মস্থলে প্রবেশ করিয়া দুব্বিষহ যাতনার উৎস উন্মুক্ত করিয়া দিতেছে। নিয়ে ঐ গাথা উদ্ধৃত করা হইল :– ( নমো ) লক্ষ্মীনারায়ণ, চক্র সুদর্শন শ্রপতি শ্ৰীজনাৰ্দ্দন । গোলোক-বিহারী, গোলোকেশ্বর হরি, বৈকুণ্ঠেতে নারায়ণ ॥ ভক্তাধীন হুরি, ভক্তের বাঞ্ছাকারী ভক্তকে করেন উদ্ধার। হইত। চাদরায় কেদাররায়ের আবাসস্থল আড়াফুলবাড়িয়া নামক গ্রাম রাজনগর হইতে প্রায় তিন ক্রোশ পুর্বদিকে অবস্থিত ছিল। (১) শ্ৰীযুক্ত বাবু কৈলাসচন্দ্র সিংহ ১২৮৯ সালের বান্ধব নামক মাসিক পত্রিকায় ৭৮ খৃষ্টায় রাজবল্লভের কীৰ্ত্তিসমূহ কীৰ্ত্তিনাশা-কর্তৃক ধ্বংস হওয়া উল্লেখ করিয়া উল্লাসের সহিত বলিয়াছেন “পাপের প্রায়শ্চিত্ত”। কৈলাস বাবুর স্তায় হৃদয়ৱান লোক ইহতে এরূপ উক্তিই আশা করা যায় ।
পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/২৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।