( ৩৭ ) মোহর অঙ্কিত করিয়া নিকাশী কাগজ তাহার হস্তে সমর্পণ করেন (১) দর কানুনগুর সিরিস্তার কৰ্ম্মচারী, কৃষ্ণজীবনকে কানুনগু-পদে নিযুক্ত করিয়া মুরশিদাবাদে প্রস্থান করিলে, ভূতপূৰ্ব্ব কানুনগু প্রত্যাবর্তন করেন ; তখন কৃষ্ণজীবন স্বীয় উদারতাবশতঃ ঐ সিলমোহর ও কানুনগুর সিরিস্তা পুনরায় তাহার হস্তে অর্পণ করিয়াছিলেন । কিশোর বাবু বলেন যে দেবীদাস বসু যশোহরবাসী ছিলেন, রাজকাৰ্য উপলক্ষে তিনি প্রথমতঃ ঢাকায় অবস্থান করেন। ঢাকার অন্তর্গত নারাণদিয়া, মগুরী, দয়াগঞ্জ-প্রভৃতি স্থলে দেবীদাস বসুর আবাসস্থলের চিহ্ন অদ্যাপি বৰ্ত্তমান আছে। দয়াগঞ্জে বসুর বাজার নামক যে হাট বিদ্যমান রহিয়াছে, তাহ ঐ দেবীদাস বস্থই সংস্থাপিত করিয়াছিলেন। ঢাকায় অবস্থান করিলে কৌলীন্তলোপ হইবে এই আশঙ্কায় তিনি বিক্রমপুরের অন্তর্গত মালথানগর নামক গ্রামে আগমন করেন। দেবীদাস বসু প্রথমতঃ কৃষ্ণমন্ত্রে দীক্ষিত ছিলেন, রাজকাৰ্য্যোপলক্ষে একদা বিপন্ন হইয়া তিনি অনেক দিন পর্য্যন্ত পলায়মান থাকেন, এবং অবশেষে শক্তিমন্ত্রে দীক্ষিত হইয়া দেওয়ান কৃষ্ণজীবন মজুমদারের সাহায্যে ঐ বিপদ হইতে মুক্তিলাভ করিয়াছিলেন। (১) কানুনগুর সিলমোহর অঙ্কন বিষয়ে মুরশিদকুলী খ ও কানুনগু দপনারায়ণ সম্বন্ধে রিয়াজুসেলাতিনে যে বিবরণ লিখিত আছে, তাহা এই—মুরশিদকুলী খা দেওয়ানী পদ লাভ করিয়া এক বৎসর মধ্যে বঙ্গল দেশের রাজস্ব বিষয়ক সুশৃঙ্খলা বিধান করেন। অতঃপর তিনি নিকাশী কাগজ প্রস্তুত করিয়া তাহ আরঙ্গজেবের সমীপে বুঝাইয়া দিবার নিমিত্ত দক্ষিণাত্যে যাত্রা করিবার উদযোগী হন; তৎকাল-প্রচলিত নীতি অনুসারে কানুনগুর সিলমোহর অঙ্কিত না থাকিলে নিকাশ সম্রাটদরবারে গ্রাহ হইত না, সুতরাং মুরশিদকুলী খ৷ তদানীন্তন কানুনগু দপনারায়ণকে নিকাশে সিলমোহর অঙ্কিত করিতে অনুরোধ করেন। দর্পনারায়ণ তিন লক্ষ দাবি করিয়া ঐ নিকাশে সিলমোহর অঙ্কিত করিতে অসম্মত হন। অগত্য সহকারী কানুনগু জয়নারায়ণের দ্বারা সিলমোহর অঙ্কিত করিয়া লইয়। মুরশিদকুলী খাঁ সম্রাট দরবারে নিকাশ উপস্থিত করেন।
পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/৫৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।