( ११ ) কৃষ্ণজীবন মজুমদার রাজকীয় কাৰ্য্যে ও যৌতুক স্বরূপ ভূসম্পত্তি লাভ করিয়া স্বকীয় অবস্থার উন্নতিসাধন এবং নবরত্ন প্রভৃতি কতিপয় হৰ্ম্ম্যদ্বারা নিজ ভদ্রাসন সুশোভিত করিয়াছিলেন । - একমাত্র কৃষ্ণজীবনের আবাসস্থল ভিন্ন বিলদাওনীয়া ও তৎপাশ্ববর্তী গ্রামে কোন উল্লেখযোগ্য আলয় বিদ্যমান ছিল না । রাজবল্লভ ঐ সমস্ত গ্রামের নানাস্থানে বহুসংখ্যক জলাশয় খনন করেন এবং খনন পুৰ্ব্বক মৃত্তিকা দ্বারা নিম্ন ভূমির উচ্চতাসাধন করিয়া তাহ মনুষ্যের আবাসযোগ্য করিয়া তোলেন । “রাজসাগর”,“রাণীসাগর”,“মহাসাগর” “মতিসাগর”, “শিবসাগর”, “শিববাড়ীর দীঘি” প্রভৃতি সরোবর এই সময়েই খনিত হইয়াছিল। রাজসাগরের উত্তরতীরস্থ বন্দর, পশ্চিমতটস্থ দেবালয়, শিববাড়ীর মঠশ্রেণী, সপ্তদশরত্ব ও পঞ্চরত্ন প্রভৃতি দেবলয়, পুরাতন হাবেলীর দক্ষিণদিকস্থ প্রাসাদ ও তথায় প্রবেশ করিবার বত্ম, রাজভবনের বিচিত্র অট্টালিকারাজি এবং তোরণদ্বারসমূহ রাজবল্লভের যত্নে ও অর্থে নিৰ্ম্মিত হইল। বিলদাওনীয়া ও পাশ্ববৰ্ত্তী গ্রাম সমূহের বিভিন্ন অংশে পাঠশালা, মক্তব ও চতুষ্পাঠী প্রতিষ্ঠিত হইল । ক্রমে তথায় ব্রাহ্মণ প্রমুখ উচ্চশ্রেণীস্থ লোকের সমাগম হইতে লাগিল এবং রাজবল্লভের যত্নে সকলেরই উন্নতি সাধিত হইলে, র্তাহারা আপন আপন ভদ্রাসন অট্টালিকা ও জলাশয় দ্বারা পরিশোভিত করিয়া তুলিলেন । বন্দর সংস্থাপিত হইলে বিবিধ শ্রেণীর ব্যবসায়িগণ তথায় আসিয়া বাস করিতে লাগিল এবং প্রত্যেকে স্বকীয় ব্যবসায় পরিচালনা দ্বারা সমৃদ্ধি সম্পন্ন হইয়া উঠিল (১)। যে সমস্ত গ্রাম ইতিপূৰ্ব্বে জনমানবহীন (১) রাজবল্লভের উৎসাহে প্রত্যেক জাতীয় শিল্পী আপন আপন ব্যবসায়ের উন্নতিসাধন করিয়াছিল। সমগ্র পূর্ববঙ্গে রাজনগরের কাংগু পাত্র, লৌহনিৰ্ম্মিত অস্ত্র, মুখর পাত্র ও কার্পাস নিৰ্ম্মিত বস্ত্র প্রভৃতি আদর্শ স্থানীয় বলিয়া বিবেচিত হইত।
পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/৯৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।