( Av ) বিলে পরিপূর্ণ ছিল, এইরূপে তাহ অচিরে অপূৰ্ব্ব শ্ৰী ধারণ করিয়া “রাজনগর” নামে খ্যাতি লাভ করিল (১)। এই সময় যে সমস্ত দেবালয় নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল, তথায় রাজবল্লভ দেবতা প্রতিষ্ঠা করিয়া প্রত্যেকের সেবার নিমিত্ত ভূসম্পত্তি উৎসর্গ করিয়া দিলেন। রাজসাগরের তীরস্থ জগন্নাথ দেব ও মহাপ্রভু নামক দেবতাদ্বয়, রাজপ্রাসাদের মধ্যস্থিত বাসুদেব, কাত্যায়নী, রাজরাজেশ্বরী, লক্ষ্মী গোবিন্দ প্রভৃতি দেবতাগণ এবং শিবাবাড়ীর দীঘির উত্তর তীরস্থ মঠের শিবলিঙ্গ সমূহ রাজবল্লভ কর্তৃকই প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। লক্ষ্মীনারায়ণ নামক যে চক্র কৃষ্ণজীবন মজুমদার জনৈক সন্ন্যাসী হইতে প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, র্তাহাকে রাজবল্লভ “রাজালক্ষ্মীনারায়ণ” আখ্যা (১) রাজনগর নিৰ্ম্মিত হওয়ার পর ঐ স্থলের কিরূপ পরিবর্তন ঘটিয়াছিল তৎসম্বন্ধে যে কিংবদন্তী প্রচলিত আছে তাহ এই –যে সময় রাজনগর নিৰ্ম্মিত হইতে ছিল তৎকালে রাজবল্লভ কাৰ্য্যস্থলে অবস্থান করিতেন । নিৰ্ম্মাণকাৰ্য্য সমাধা হইলে তিনি ছদ্মবেশে রজনীযোগে জন্মভূমিতে আগমন করেন ; বিলদাওনীয়ার সমীপবৰ্ত্তী হইয়। রাজবল্লভ একে একে কতিপয় লোককে বিলদাওনীয়ার রাস্তা জিজ্ঞাসা করিলে, তাহার প্রত্যুত্তরে বলে যে, বিলদাওনীয়া নামে কোন গ্রামের অস্তিত্ব নাই, রাজনগরের পথ জানিবার প্রয়োজন হইলে তাহা দেখাইয় দিতে পারি।” অবশেষে তিনি নিজলয়ের প্রথম তোরণ-দ্বীরে উপস্থিত হইয়। ঐ স্বার অতিক্রম করিতে উদ্যত হইলে দ্বারপাল উহাকে চিনিতে না পারিয়া বাধা প্রদান করে । অগত্য। তিনি ঐ স্বারপালকে উৎকোচের সাহায্যে বশীভূত করিয়া প্রথম দ্বার উত্তীর্ণ হন । এইরূপে ক্রমে তিন স্বার অতিক্রম করিয়ী রাজবল্লভ চতুর্থদ্বারের সমীপবৰ্ত্তী হইলে, ঐ স্বারের রক্ষক তাহাকে আর অগ্রসর হইতে দেয় না। এস্থলেও তিনি উৎকোচ প্রদানের প্রস্তাব করিয়া ছিলেন, কিন্তু ঐ দ্বারপাল সম্পূর্ণ বিভিন্ন উপাদানে গঠিত ছিল, সে কোনক্রমেই ছদ্মবেশী রাজবল্লভকে অগ্রসর হইতে দিল না। তখন তিনি আত্ম-পরিচয় প্রদান করিতে বাধ্য হইলেন এবং দ্বারপাল নতজামু হইয়। ক্ষম প্রার্থন পূর্বক স্বল্পমুক্ত করিয়া দিল । পরদিন প্রথম তিন দ্বারের রক্ষকগণ পদচু্যত ও চতুর্থ স্বারের রক্ষক পুরস্কৃত হইয়াছিল ।
পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/৯৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।