( *२ ) নাথের প্রপিতামহ, দেববংশোদ্ভব নিম্নশ্রেণীস্থ বৈদ্যের দৌহিত্র ছিলেন বলিয়া এবং স্থান-ত্যাগ নিবন্ধন এই বংশের মর্য্যাদার অনেক লাঘব হইয়াছিল। হরিনাথের পিতামহ জানকী-বল্লভ রায় কায়স্থ-বংশীয় রাজা প্রতাপাদিত্যের অনুগ্রহে খড়রিয়া পরগণার জমিদারী লাভ করেন এবং রামভদ্র, বলভদ্র ও রামকৃষ্ণ-নামে র্তাহার যে তিন পুত্র জন্মে, তাহারা বিদ্যাবত্তার নিমিত্ত যথাক্রমে কবিকর্ণপুর, কবিচন্দ্র, এবং কবিকঙ্কণ উপাধি লাভ করেন। যদিও এই সময় হইতে বিষ্ণুদাশ-বংশ পুনরায় উজ্জ্বলতা প্রাপ্ত হইয়াছিল, তথাপি এই বংশ যে কুলীন সমাজে সৰ্ব্বপ্রধান স্থান অধিকার করে তাহ অন্ত বংশীয় বৈদ্যগণের অভিপ্রেত ছিল না । এই সময় হরিনাথ সাতিশয় প্রবল পরাক্রান্ত। সমগ্র কুলীন শ্রদায়-মধ্যে এমন লোক অতি বিরল ছিলেন, ধিনি রাজা হরিনাথের বিরুদ্ধে দণ্ডায়মান হইয়া আত্মসন্মান রক্ষা করিতে সাহসী হইতেন। সৌভাগ্যক্রমে তৎকালে যশোহরের অন্তর্গত বেন্দা-গ্রামে কান্নদাশ-বংশে রামকান্ত নামে এক সুকবি, সৎসাহসী এবং প্রকৃত পণ্ডিত পদবাচ্য ব্যক্তি বিদ্যমান ছিলেন । সমস্ত কুলীন-সম্প্রদায় উপস্থিত বিপদ হইতে আত্মসম্মান রক্ষা করিবার নিমিত্ত রামকাস্তের শরণাপন্ন হইলেন । রামকান্ত বিশেষরূপে জ্ঞাত ছিলেন যে, রাজা হরিনাথের বিরুদ্ধে দণ্ডায়মান হইলে, তৎপক্ষে প্রিয় জন্মভূমিতে অবস্থান করা অসাধ্য হইবে । তথাপি তিনি ঐ সমস্ত কুলীনগণের সম্মান রক্ষার নিমিত্ত কৃতসংকল্প হইলেন এবং তাহাদের সহায়তায় আত্মরক্ষার উপায়ের অনুষ্ঠান করিয়া নিৰ্দ্ধারিত সময়ে রাজা হরিনাথের চন্দন-সভায় উপস্থিত হইলেন । অনুষ্ঠান অতি সমারোহ সহকারে সম্পাদিত হইয় থাকে এবং ইহা বহুব্যয়সাধ্য সন্দেহ নাই । মহারাজ রাজবল্লভ রাজ গঙ্গাদাসের বিবাহ উপলক্ষে একবার এবং স্বীয় ৰিধৰ। কুস্যার দত্তক গ্রহণ উপলক্ষে একবার চলনের অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন ।
পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/৯৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।