অনির্ব্বচনীয়ের নানা ছন্দ, নানা ব্যঞ্জনা। একদিকে এই প্রসাধনের বৈচিত্র্য, আর একদিকে এই উপলব্ধির নিবিড়তা ও বিশেষত্ব। মহুয়ার কবিতা চিত্তেব সেই মায়ালোকের কাব্য; তা’র কোনো অংশে ছন্দে ভাষায় ভঙ্গীতে এই প্রসাধনেব আয়োজন, কোনো অংশে উপলব্ধির প্রকাশ।”
“এই দুয়ের মধ্যে নূতনের বাসন্তিক স্পর্শ নিশ্চয় আছে—নইলে লিখ্তে আমার উৎসাহ থাক্তো না। তুমি তো জানোই কত অল্প সময়ের মধ্যে এগুলি সমাধা ক’রেছি। তা’র কারণ প্রবর্তনার বেগ মনে সতেজ ছিল। তাই অন্যমনস্কভাবে এই পত্রের পূর্ব্বাংশে তোমাকে যা লিখেছি অপরাংশে তা’র প্রতিবাদ ক’র্তে হ’লো। ব’লেছিলুম এ লেখাগুলি আকস্মিক। ভুলেছিলুম সব কবিতাই যখনি লেখা যায় তখনি আকস্মিক। সব কবিতা ব’ল্লে হয়তো বেশি বলা হয়। এক একটা সময়ের এক একটা নতুন ঝাঁকের কবিতা। বারো মাসে পৃথিবীর ছয় ঋতু বাঁধা, তাদের পুনরাবর্ত্তন ঘটে। কিন্তু আমার বিশ্বাস, একবার আমার মন থেকে যে-ঋতু যায় সে আর-এক অপরিচিত ঋতুর জন্যে জায়গা ক’রে বিদায় গ্রহণ করে। পূর্ব্বকালের সঙ্গে কিছু মেলে না এ হ’তেই পারে না, কিন্তু সে যেন শরতের সঙ্গে শীতের মিলের মতো। মনের যে-ঋতুতে মহুয়া লেখা সে আকস্মিক ঋতুই, ফরমাসের ধাক্কায় আকস্মিক নয়, স্বভাবতই আকস্মিক। এগুলি যখন লিখ্ছিলুম অপূর্ব্বকুমার প্রায় রোজ এসে শুনে যেতো, সে যে- উত্তেজনা প্রকাশ ক’র্তো সেটা অপূর্ব্বতায়ই উত্তেজনা। রূপের দিকে বা ভাবের দিকে একটা কিছু নতুন পাচ্ছে ব’লেই তা’র আগ্রহ—তখন সুধীন্দ্র দত্তও ছিল তা’র সঙ্গী। তা’র থেকে আমার বিশ্বাস আপনার এই সমর্থন পেতো যে, মনের মধ্যে রচনার একটি বিশেষ ঋতুর সমাগম হ’য়েছে—তাকে পূরবীর ঋতু বা বলাকার ঋতু ব’ল্লে চ’ল্বেনা।”