পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/২৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

RR8 জীবন-চরিত ! নগরে নগরে, এমন কি অনেক পল্লীতেও, এক এক একটী নাট্যসমাজ প্ৰতিষ্ঠিত হইয়াছে, বেলগাছিয়া নাট্যশালাই তাহার প্রথম পথপ্ৰদৰ্শক । এই সকল নাট্যসমাজের জন্য, বর্ষে বর্ষে, বাঙ্গালা ভাষায় শত শত নাটক, নাটক এবং প্ৰহসন রচিত হইতেছে । উৎকৃষ্ট, অপকৃষ্ট যাহাই হউক, বঙ্গভাষা যে তাহাদিগের দ্বাবা কিয়ৎপরিমাণে সমৃদ্ধিমতী হইতেছে, তাহাতে সন্দেহ নাই । এই সকল নাট্যশালার আদর্শেই আমাদিগের দেশের প্রচলিত যাত্ৰা ইত্যাদির সংস্কার হইয়াছে। পৌরাণিক চিত্র অবলম্বন করিয়া বাঙ্গালা ভাষায় নাটক রচনার প্রথা বেলগাছিয়া নাট্যশালাই, সৰ্ব্ব প্ৰথমে, এদেশে প্ৰদৰ্শন করিয়াছিল। রত্নাবলী এবং শৰ্ম্মিষ্ঠার অনুকরণে, এক সময়, যে এদেশে, কত নাটক রচিত হইয়াছিল, তাহার সংখ্যা নাই। কিন্তু বেলগাছিয়া নাট্যশালার সম্বন্ধে সৰ্ব্বাপেক্ষা প্ৰশংসার বিষয় এই যে, ইহা কেবলই সংস্কৃতিরীতির পক্ষপাতী ব্যক্তিদিগের সমাদর করিয়া নিরস্ত হয় নাই ; সেই সঙ্গে ইংরাজী শিক্ষিত “ব্যক্তিদিগকেও সাহিত্য-ক্ষেত্রে আহবান করিয়া তাহাদিগের প্রতিভাবিকাশের সুযোগ প্ৰদান করিয়াছিল। বেলগাছিয়া নাট্যশালা প্ৰতিষ্ঠিত হইবার পূৰ্ব্বে নাটক রচনা সংস্কৃতজ্ঞ ব্যক্তিদিগেরই একমাত্র অধিকার বলিয়া বিবেচিত হইয়া আসিতেছিল । কেহ কেহ মনে করিতেন, ইংরাজী শিক্ষিতগণ, অন্য বিষয়ে কৃতকাৰ্য্য হইলেও, নাটক রচনায় কখনও সংস্কৃতজ্ঞ ব্যক্তিদিগের সমকক্ষ হইতে পরিবেন না । কিন্তু মধুসূদনের ন্যায় ব্যক্তিকে প্ৰতিদ্বন্দ্বিতীয় আহবান করিয়া বেলগাছিয়া নাট্যশালার অনুষ্ঠাতাগণ র্তাহাদিগের সে ভ্রম দূর করিয়াছিলেন । এদেশে নাট্যশাস্ত্রের যদি কখনও পুনরুজ্জীবন হয়, তবে যে তাহা ইংরাজী শিক্ষিত ব্যক্তিদিগেরই দ্বারা হইবে, তঁাহারাই তাহার প্রথম প্ৰমাণ প্ৰদৰ্শন করিয়াছিলেন। জাতীয় নাট্যশালার পুনরুদ্ধার জাতীয় সাহিত্যের পক্ষে একটা অতি মহৎ অনুষ্ঠান ; সেই অনুষ্ঠানের সহিত মধুসূদনের জীবনের ঘনিষ্ঠ