পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/২৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শৰ্ম্মিষ্ঠা ও পদ্মাবতী রচনা | Sx9ፃ একটি কথা বলিলে, আরও দুই একটি ঘটনার সমাবেশ করিলে, তাহদিগের পূর্ণত হইত। মূল উপাখ্যানের কোন কোন নাটকোচিত অংশ পরিত্যাগ করাতেই শৰ্ম্মিষ্ঠা এইরূপ অপূর্ণতা দোষে দূষিত হইয়াছে। আমরা দৃষ্টান্ত স্বরূপ একটী স্থলের উল্লেখ করিতেছি । দৈত্যসভা মধ্যে শৰ্ম্মিষ্ঠার প্রতি দৈত্যরাজের নির্বাসন-দণ্ডাজ্ঞা, শৰ্ম্মিষ্ঠ উপাখ্যানের একটীি উৎকৃষ্ট নাটকোচিত অংশ। সহিষ্ণুতায় এবং ধৈৰ্য্যে মহাভারতকার শৰ্ম্মিষ্ঠাকে তথায় প্ৰকৃত দেবীরূপে চিত্ৰিত করিয়াছেন । পিতার কঠোর আদেশে, এমন কি গৰ্ব্বিতা দেবযানীর বাঙ্গেও, তাহাব ধৈর্যচুতি হয় নাই। শৰ্ম্মিষ্ঠা নাটকে এই অংশ পরিত্যাগ করাতে শৰ্ম্মিষ্ঠার চরিত্র পরিস্ফুটনের ব্যাঘাত ঘটিয়াছে। শুক্রাচাৰ্য্য প্রভৃতি অন্যান্য নাটকীয় পাত্ৰগণেরও সম্বন্ধে কবির এইরূপ ক্ৰটী লক্ষিত হয় । শৰ্ম্মিষ্ঠার অপর দোষ এই যে, ইহার ভাষা, কবিত্বপূর্ণ হইলেও, নাটকোপযোগী নয়, এবং ইহার ভাব অনেক স্থলে কৃত্রিমতাপূর্ণ। সংস্কৃত নাটক সমূহের যতই গুণ থাকুক, কৃত্রিমতা তাহাদিগের প্রধান দোষ। সংস্কৃত নাটক সমূহকে আদর্শ করিতে যাওয়াতেই শৰ্ম্মিষ্টা কৃত্রিমতা দোষে দূষিত হইয়াছে। আমরা একটী দৃষ্টান্ত প্ৰদৰ্শন করিতেছি। দেবযানীকে দর্শনান্তলা দৈত্যদেশ হইতে প্ৰত্যাগত রাজা, দীর্ঘনিশ্বাস পরিত্যাগ পূর্বক, মনে মনে বলিতেছিলেন ;- “আহা । কি কুলগ্নেই বা দৈত্যদেশে পদাৰ্পণ করিয়াছিলাম। (চিন্তা করিয়া) হে রসনে, তোমার কি এ কথা বলা উচিত ? দেখ, তোমার কথায় আমার নয়নযুগল ব্যথিত হয়। কেননা দৈত্যদেশ গমনে তারা সেখানে বিধাতার শিল্প-নৈপুণ্যের সামপদার্থ দৰ্শন করেছে। বাড়বানলে পরিতপ্ত হলে মানব যেমন উৎকণ্ঠিত হন, আমিও কি অদ্য সেইরূপ হলেম ? হে প্ৰভো অনঙ্গ, তুমি হরকোপানলে দগ্ধ হয়েছিলে বলে কি প্রতিহিংসার নিমিত্তে মানব জাতিকে কামায়িতে সেইরূপ দগ্ধ করা ? কি আশ্চৰ্য্য। আমি কি মৃগয়া করতে গিয়ে স্বয়ং কামব্যাধের লক্ষ্য হয়ে এলম ?” affè CM7