মেঘনাদবধ-রচয়িত মধুসূদন দত্তের জন্মভূমি। সাগরদাঁড়ী যশোহর নগর হইতে আটাশ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত। প্রসন্নসলিলা কপোতাক্ষী ইহার তিনদিক্ বেষ্টন করিয়া প্রবাহিত হইতেছে। সংসারে যাঁহারা প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়া যান, তাঁহাদিগের জনক, জননীর নামের সঙ্গে তাঁহাদিগের জন্মভূমির নামও অমরতা লাভ করে। ভক্ত-কবি জয়দেবের স্মৃতি কেন্দুবিম্ব ও অজয়কে তীর্থক্ষেত্রে পরিণত করিয়াছে; মধুসূদনের নামের সঙ্গে তাঁহার জন্মভূমি সাগরদাঁড়ীর এবং তাঁহার প্রিয়নদী কপোতাক্ষীর নামও বঙ্গীয় সাহিত্য-সেবকগণের নিকট সমাদৃত হইবে।
পিতৃপুরুষগণ ও তাঁহাদের আদি বাসস্থান।
সাগরদাঁড়ী মধুসূদনের পূর্বপুরুষদিগেদ আদি বাসস্থান নয়। তাঁহার প্রপিতামহ, রামকিশোর দত্ত, খুলনা জিলার অন্তর্গত তালাগ্রামে বাস করিতেন। রামকিশোরের তিন পুত্র; প্রথম রামনিধি, দ্বিতীয় দয়ারাম, এবং তৃতীয় মাণিকরাম। পিতৃবিয়োগের পর রামনিধি, কনিষ্ঠদিগকে সঙ্গে লইয়া, তালাগ্রাম পরিত্যাগপূর্বক, সাগরদাঁড়ীতে মাতামহাশ্রয়ে আসিয়া বাস করেন। সাগরদাড়ী সেই সময় হইতে দত্তবংশীয়দিগের বাসস্থান হইয়াছে। রামনিধির চারি পুত্র । জ্যেষ্ঠ রাধামোহন, মধ্যম মদনমোহন, তৃতীয় দেবীপ্রসাদ এবং কনিষ্ঠ রাজনারায়ণ। মধুসূদন রাজনারায়ণের পুত্র।
পিতা ও পিতৃব্যগণ ।
মধুসূদনের পিতা ও পিতৃব্যগণ সকলেই বুদ্ধিমান, উপার্জ্জনক্ষম এবং স্বধম্মানুমোদিত ক্রিয়া, কর্ম্মে একান্ত অনুরক্ত ছিলেন। সে সময়ে যেরূপ বিদ্যার সমাদর ও প্রচলন ছিল, তাঁহারা কেহই তাহার উপার্জ্জনে ত্রুটী করেন নাই। দানশীলতা, সৌজন্য, এবং অতিথি, অভ্যাগতের সেবা প্রভৃতি যে সকল সদ্গুণের জন্য, সাগরদাঁড়ীস্থ দত্ত পরিবার, এখনও, তাঁহাদিগের স্বদেশীয়