পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/৩৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VOOR জীবন-চরিত { লেন। তথায় বিলাতী সভ্যতার অনুকরণে ভগ্নীকে চুম্বন কারিয়া, পত্নীকে বারাঙ্গনার ন্যায় সম্বোধন করিয়া, এবং পিতাকে “মদ লেয়াও”। আঞ্জাদান করিয়া যথোচিত আপ্যায়িত ও পরিতুষ্ট করিলেন। নবকুমারের বৃদ্ধ পিতা, শেষ “কলকাতা মহাপাপ নগর, কলির রাজধানী, সেখানে কোন ভদ্রলোকের বসতি করা উচিত নয়” এইরূপ স্থির করিয়া, পত্নী, পুত্ৰ ইত্যাদি সকলকে সঙ্গে লইয়া, শ্ৰীবৃন্দাবন যাত্ৰা করিলেন । একেই কি বলে সভ্যতা সমাপ্ত হইল । মধুসুদন তাহাব প্রহসনে যে চিত্র অঙ্কিত করিয়াছিলেন, তাহা কোন বিষয়ে বিন্দুমাত্র ও অতিরঞ্জিত নহে। ইংরাজী শিক্ষা প্ৰচলনের প্ৰথমাবস্থায়, এইরূপ এক সম্প্রদায় শিক্ষিত মহাপুরুষ প্রকৃতই বঙ্গদেশে আবিভূতি হইয়াছিলেন। বিদ্যাবুদ্ধিতে ইহারা স্বসমকালবৰ্ত্তিগণের অগ্রগণা ছিলেন । নানা বিষয়ে বঙ্গদেশ ইহাদিগের নিকট অপরিশোধ্য ঋণে আবদ্ধ আছেন; কিন্তু সুনীতি ও সদাচার সম্বন্ধে ইহাদিগের মধ্যে অনেকে যে কুদৃষ্টান্ত দেখাইয়াছিলেন, আমাদিগকে এখনও তাহার বিষময় ফল ভোগ করিতে হইতেছে । একেই কি বলে সভ্যতায় যে সকল চরিত্ৰ প্ৰবৰ্ত্তিত হইয়াছে, তাহা সে সময়কার অনেকগুলি সজীব ইয়ং বেঙ্গলের অবিকল প্রতিরূপ মাত্ৰ। মধুসূদনের সমসাময়িক ও সুহৃদ, ডাক্তার রাজেন্দ্রলাল মিত্ৰ, একেই কি বলে সভ্যতার সমালোচনা প্রসঙ্গে বলিয়াছিলেন ;- “ইয়ং বেঙ্গল অভিধেয়-নববাবুদিগের দোষোদোঘাষণই বৰ্ত্তমান প্রহসনের একমাত্র উদ্দেশ্য ; এবং তাহা যে অবিকল হইয়াছে, ইহার প্রমাণার্থে আমরা এইমাত্র বলিতে পারি যে, ইহাতে যে সকল ঘটনা বর্ণিত হইয়াছে, প্ৰায় তৎসমুদায়ই আমাদের জানিত কোন না। কোন নববাবু দ্বারা আচরিত হইয়াছে।” ডাক্তার মিত্র, নিজেও, তখনকার একজন ইয়ং বেঙ্গল ছিলেন ; সুতরাং র্তাহার এরূপ মন্তব্য, মধুসূদনের গ্রন্থ যে সে সময়কার সমাজের অবিকল