পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/৪১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জীবন-চরিত। ܐ[92ܝܪ cሳቕ8 সেই সকলের সঙ্গে, সেই আলুলায়িতকুন্তলা, পুষ্পমালাভরণা, ' অশ্রীপুর্ণনয়না, দীনা, বিধবার কথা চিন্তা করুন। এই কি সেই বিদ্যুল্লতসদৃশী প্ৰমীলা ? যিনি, এক দিন, রঘুসৈন্যকে সন্ত্রস্ত করিয়া, পতিপদপূজার জন্য, লঙ্কাপুরীতে প্ৰবেশ করিয়াছিলেন, এই অশ্রুসিক্তমুখী বিধবা কি সেই প্রমীলা ? সেই মূৰ্ত্তিমতী সমবলক্ষ্মীর পরিণাম কি এই হইয়াছে ? তাহার বীরাঙ্গনা সঙ্গিনীগণ, তাহার সমরসজ্জা, ঊৰ্তাহার “বাড়বাগ্নিশিখা সদৃশী বামী,” এই শ্মশান-শয্যায়ও তাঁহাকে পরিত্যাগ করে নাই । কিন্তু হায় ! নিয়তি চক্রের কি ভয়ানক আৰৱৰ্তনই ঘটিয়াছে। পাঠক, তৃতীয় স্বৰ্গে প্ৰমীলার সেই রণসজ্জা, এবং সেই ভৈরবী মূৰ্ত্তি দর্শন করিয়াছেন, সখীগণের প্রতি সেই উৎসাহ বাক্য শ্রবণ করিয়াছেন ; নবম সর্গে প্ৰমীলার চিন্তা-সজ্জা, এবং শোকমলিন মুখশ্ৰীও, একবার, দর্শন করুন ; সখীগণকে সম্বোধন করিয়া তাহার সেই মৰ্ম্মাভিঘাতিনী বাণীও, একবার, শ্রবণ করুন ; এবং তাহার পর চিন্তা করিয়া বলুন, প্ৰমীলার লঙ্কা-প্ৰবেশ। শরতের মেঘের ন্যায় আপনার হৃদয় হইতে ভাসিযা যায় কি না ? মধ্যাহ্ন গগনের উজ্জ্বলতা না দেখিলে সায়াহের ঘনঘটা কেমন করিয়া বুঝিবেন ? পৌর্ণমাসীর সৌন্দৰ্য্য অনুভব না। করিলে অমানিশার ভীষণত্ব কেমন করিয়া উপলব্ধি করিবেন ? মেঘনাদবধের নবম সর্গের বিষাদময় ভােব অনুভব করিতে হইলে তৃতীয় সর্গের আবশ্যক। প্ৰমীলা সাধারণ নারীর ন্যায় চিত্ৰিতা হইলে পাঠক হৃদয়ের যে ভাব লইয়া মেঘনাদবধ সমাপ্ত করিতেন, তৃতীয়া সর্গে বর্ণিতা প্রমীলাকে দর্শন করিয়া তাহাকে তদপেক্ষা শতগুণ বিষাদের সঙ্গে গ্ৰন্থ শেষ করিতে হয়। আমরা পূর্বেই বলিয়াছি যে, রাক্ষসদিগের প্রতি পাঠকের সহানুভূতির উদ্দীপন, মেঘনাদবধকারের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল ; প্রমীলাচরিত্রেই তাহার সে উদ্দেশ্য বিশেষরূপ সার্থক হইয়াছে। রাক্ষসরাজের অসংযত বাসনারূপ দাবানলে যে কত কোমলা বল্লারী, কত শোভা