পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/৪১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

QZ জীবন-চরিত । “যুদ্ধসাধ ত্যজিনু, অমনি”, ইত্যাদি কথাগুলি নিতান্তই ভীরু-জনোচিত হইয়াছে। রামচন্দ্রের চরিত্রে এরূপ ভীরুতা-দোষ আরোপ করাতে কাব্যের সৌন্দৰ্য্যের হানি হইয়াছে { একেই ত রাক্ষসগণের প্রতি অতিরিক্ত সহানুভূতি মধুসুদনকে রামচন্দ্রের মহত্ব অনুভবে অক্ষম করিয়াছিল ; তাহার উপর তিনি কাশীরামদাসের মহাভারতে প্ৰমীলার সঙ্গে ব্যবহারে অর্জনের যে আদর্শ প্ৰাপ্ত হইয়াছিলেন, তাহাও উন্নত নয় ; অর্জনও তাঁহাতে কাপুরুষের ন্যায় চিত্ৰিত হইয়াছেন। আদর্শকে উন্নত না করিয়া অন্ধের ন্যায় অনুসরণ করাতেই রামচন্দ্রের চরিত্র সম্বন্ধে মধুসূদন এরূপ ভ্ৰমে’ পতিত হইয়াছিলেন। প্ৰমীলা-চরিত্রের গাম্ভীৰ্য্যের সঙ্গে রামচন্দ্রেরও চরিত্রের মহত্ত্ব রক্ষিত হইলে মেঘনাদবন্ধের তৃতীয় সৰ্গ সৰ্ব্বাঙ্গসুন্দর হইত। চতুৰ্থ সৰ্গ-মধ্যাহ্নের উজ্জ্বল আলোকের পর সন্ধ্যার সুস্নিগ্ধ ছায়া যেমন তৃপ্তিদায়িনী, মেঘনাদবধের তৃতীয় সর্গের পর চতুর্থ সৰ্গও তেমনই প্রীতিকর। যাহার অনুপম চরিত্র, এই সুদীর্ঘ কাল, হিন্দুনরনারীদিগের প্রাণ অমৃতাভিষিক্ত করিয়া আসিতেছে, চতুর্থ সর্গে আমরা সেই দেবীর অথবা সেই মুক্তিমতী পবিত্রতার প্রথম সাক্ষাৎকার লাভ করি। লঙ্কাযুদ্ধের সময় সীতাদেবী কারাগারের বন্দিনী ; কিন্তু সেই বন্দিীশালার অভ্যন্তরে ? মধুসুদন তাহার শোকমলিন মুখশ্ৰীতে যে মধুরতা সন্নিবেশ করিয়াছেন, তাহা বিশ্বত হইবার নয়। আমরা চতুর্থ সর্গে দেখিতে পাই, লঙ্কাপুৰী আনন্দোৎসবে মগ্ন । রত্নহার রাজমহিষীর ন্যায় রাক্ষসরাজের কাঞ্চনসৌধকিৰীটিনী পুরী দীপমালায় সুশোভিত হইয়াছে ; গৃহাগ্রে গৃহ গ্রে বিজয়-পতাকা উডীন হইতেছে ; বাতায়নে বাতায়নে দীপাবলী সজ্জিত রহিয়াছে, এবং চতুর্দিকে কুসুমদাম বৰ্ষিত হইতেছে। যাহার পরাক্রমে দেবগণও ভীত, সেই ইন্দ্ৰবিজয়ী বীর মেঘনাদ পুনর্বার সেনাপতি পদে ौडibएि।