পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/৪৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 Y खौरन-फ्रउि । ফেলিয়াছেন, মেঘনাদবধের কবিও তেমনই, রাম লক্ষ্মণকে বিসর্জন দিয়া, পাপাচারী রাক্ষসরাজ ও র্তাহার পরিজনন্দিগকেই তঁহার কাব্যের নায়ক, নায়িকা করিয়া তুলিয়াছেন। পাপাচারীর প্রতি কবির যখন এত সহানুভূতি, তখন নীতির দিক হইতে বিচার করিলে, সহস্র গুণ সত্ত্বেও, তঁহার কাব্য নিন্দনীয়। এই সকল কথা যে কিয়ৎপরিমাণে সত্য, তাহাতে সন্দেহ নাই । কিন্তু আমাদিগকে বিবেচনা করিতে হইবে যে, মধুসুদন, পাপীর প্রতি সহানুভূতি প্ৰকাশ করিলেও, পাপের প্রতি সহানুভূতি প্ৰদৰ্শন করেন নাই। যে অসদাচারের জন্য রাক্ষসরাজ সাধু-সমাজের ঘূণাৰ্ছ, কবি কুত্ৰাপি তাহার সমর্থন করেন নাই ; বরং তিনি যে আত্মবঞ্চক এবং তঁহারই পাপাচারের ফলে যে রাক্ষসবংশের সৰ্ব্বনাশ ঘটিতেছিল, প্ৰতি পদেই তাহার উল্লেখ করিয়াছেন । মেঘনাদবধ পাঠ করিয়া কাহারও মনে রাক্ষসরাজের অনুচিত কাৰ্য্যের অনুকরণ না সমর্থনা করিবার প্রবৃত্তি জন্মে না। একদিকে আমরা, যেমন, রক্ষোবংশের ঐশ্বৰ্য্য, বাহুবল, সৌভাগ্য, এবং রূপ, গুণ দেখিয়া, বিস্মিত হই, অন্যদিকে আবার, তেমনই, তাহাদিগের অবিমূখ্যকারিতার শোচনীয় পরিণাম দর্শন করিয়া, সন্ত্রস্ত ও উপদিষ্ট হই। সুতরাং অসৎ দৃষ্টান্তের সমর্থনা করিলে যে অনিষ্টপাতের সম্ভাবনা, মেঘনাদবধ হইতে তাহার কোনও আশঙ্কা নাই। ধন, মান, গৌরব, বাহুবল, এমন কি ইষ্টদেবে প্ৰগাঢ় ভক্তি সত্ত্বেও, পাপাচরণের ফলে, মনুষ্যের পরিণাম কিরূপ হইতে পারে, ইহাতে তাহা অতি সুন্দর রূপ প্ৰদৰ্শিত হইয়াছে। সত্য বটে, ইহাতে পাপাচারী রাক্ষসরাজের নিজের কোন দণ্ড বর্ণিত হয় নাই ; কিন্তু দণ্ড আর কাহাকে বলে ? মেঘনাদের ন্যায় পুত্র এবং প্ৰেমীলার ন্যায় পুত্রবধূকে চিন্তানলে সমৰ্পণ করিয়া রাক্ষসরাজ যে ক্লেশ ভোগ করিয়াছিলেন, রামচন্দ্রের শরে হৃৎপিণ্ড বিদারিত হইলে, কি তিনি তাঁদপেক্ষা অধিক ক্লেশ ভোগ করিতেন ? “ধৰ্ম্মের জয় এবং অধৰ্ম্মের পরাজয়”