পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

रात्रा-छौदना । র্তাহার জন্মভূমি সাগরদাড়ী অতি সুকোমল গ্ৰাম্যশোভায় পুর্ণ। নদী, প্ৰান্তর, এবং বৃক্ষলতা প্ৰভৃতি যে সকল উপাদান লইয়া বঙ্গের পল্লীগ্রামের সৌন্দৰ্য্য, তাহার কোনটীরই সেখানে অভাব নাই। নিৰ্ম্মলসলিলা কপোতাক্ষী, ইহার তিনদিক বেষ্টন করিয়া, ধীরে ধীরে প্রবাহিত, হইতেছে। ঘনসন্নিবিষ্ট বুক্ষশ্রেণী, শাখায় শাখায় সম্বদ্ধ হইয়া, স্থানে স্থানে তাহার উপর অবনতি হইয়া পড়িয়াছে। শ্যামল তৃণাচ্ছাদিত ভূমি, নদীর তট হইতে জলের রেখা পৰ্যন্ত, প্রসারিত রহিয়াছে। নগরের কৃত্রিমতার সঙ্গে সেখানকার কোন সম্বন্ধ নাই | প্ৰকৃতি অতি সরল, গ্ৰাম্য মূৰ্ত্তিতে সেখানে বিরাজিতা । নদীজলে কুলললনাগণ স্নানাবগাহন করিতেছেন ; ক্ষুদ্র, বৃহৎ নানা প্রকারের তরণী সমূহ নদীবক্ষে গমনাগমন করিতেছে ; কৃষক-বনিতাগণ, কলসীকক্ষে, নদীতটে দণ্ডায়মান হইয়া, একদৃষ্টিতে তাহাদিগের পানে চাহিয়া রহিয়াছে ; রাখালবালকগণ, পশুপাল ছাড়িয়া, ইতস্ত তঃ ক্রীড়া করিতেছে ; দেখিলে, নগবের কোলাহল বিস্মৃত হইয়া, সেই সরল, গ্ৰাম্য সৌন্দর্যে মগ্ন হইয়া যাইতে হয়। কপোতাক্ষীর পশ্চিমদিকে দূৰপ্ৰসারিত শ্যামল প্ৰান্তর। নদীর উভয় তটে বৃক্ষলতাব অন্তরালে স্থানে স্থানে কৃষকদিগের কুটীর ; মধ্যে মধ্যে দুই একটী প্ৰাচীন বট বা অশ্বখ বৃক্ষ। উদ্যানজ তরুসমূহের ঘনসন্নিবেশে গ্রামটী মধ্যাহ্নকালেও ছায়াপূর্ণ। মধুসূদনের কণ্ঠস্বর নীরব হইয়াছে ; কিন্তু তাহার জন্মভূমিৰ বিহগগণের সঙ্গীতের এখনও বিরাম হয় নাই। পাপিয়ার গগনভেদী কণ্ঠস্বরে এখনও তাহ পূর্বের ন্যায় দিবারাত্ৰি প্ৰতিধ্বনিত হইতেছে। কত অযত্ন-সন্তুতি তরুলতা, উদ্যানজ বৃক্ষরাজীর সঙ্গে সম্মিলিত হইয়া, গ্রামটাকে আরণ্যশোভায় অলঙ্কত করিয়া রাখিয়াছে। মধুসূদনের পৈত্রিক বাসভবনের অদুৰ্ববৰ্ত্তী নদীতটে দণ্ডায়মান হইয়া, একবার, জোৎস্নালোকে, পাপিয়ার দিগন্ত:প্লাৰী সঙ্গীত শ্রবণ করিতে করিতে, নিস্তব্ধ গ্রামটার এবং ধীরবাহিনী কপোতা