পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R8 জীবন-চরিত । এবং শিক্ষকের নিকট যে সকল পারসী কবিতা অভ্যাস করিতেন, বাঙ্গালায় তাহার অনুকরণ করিবার চেষ্টা করিতেন। তঁহার আরও একটী ভাস ছিল । তিনি নিজে গল্প রচনা করিয়া সঙ্গীদিগকে শুনাইতেন । পাছে, তাহার রচনা বলিয়া বুঝিলে, সঙ্গীরা তাহার গল্প শুনিতে না চান, সেই জন্য তিনি, “ইহা অমুকের নিকট শুনিয়াছি,” এইরূপ বলিতেন। এই সকল গল্প। এত শীঘ্র ও সুন্দাদরূপে বলিতেন যে, তাহার সমবয়সীরা কিছুতেই তােহা তাহার নিজের রচনা বলিয়া বুঝিতে পারিতেন না। যে কল্পনা একদিন মেঘনাদ ও বীরাঙ্গনা প্ৰসব করিয়াছিল, এবং “যাহা অক্লান্তপক্ষ বিহগের ন্যায় স্বাগ, মৰ্ত্তা, পাতাল কোথাও বিচরণ করিতে ক্রটি করে নাই” + শৈশবে তােহা এইৰূপে বিকাশ প্ৰাপ্ত হইয়াছিল । মধুসূদনের সাহিত্যিক জীবন বুঝিবার জন্য তাহার শৈশব সম্বন্ধীয় যাহা কিছু বলিবার আবশ্যক, আমরা তাহার সকল গুলিরই উল্লেখ করিয়াছি । তাহাব সাধারণ প্ৰকৃতি বুঝিবার জন্য এই সময়ের একটা ঘটনা উল্লেখ করিয়া বৰ্ত্তমান অধ্যায় শেষ করিব । পুর্ণ বয়সে মধুসুদন দারুণ উচ্ছঙ্খল হইয়াছিলেন । অকিঞ্চিৎকর সুখের জন্য সামাজিক, নৈতিক কোন প্ৰকার শাসনই তিনি গ্ৰাহা করিতেন না । আলোকসামান্য প্ৰতিভ সত্ত্বেও, সেই জন্য, তাহার জীবন দুঃখময় হইয়াছিল । তাহার সমকালীন, বঙ্গদেশের প্রতিষ্ঠাবান ব্যক্তিদিগের মধ্যে উচ্ছঙ্খল ব্যক্তির অভাব ছিল না। কিন্তু মধুসূদনের এবং তঁহাদিগের মধ্যে এই পার্থক্য ছিল যে, ঘোর কদাচারী হইয়াও, তাহারা এমনই কৌশলে লোকের চক্ষুতে ধূলি প্ৰক্ষেপ করিয়া, পলায়ন করিতে পারিতেন যে, কেহ তাহাদিগের কেশগ্রও দেখিতে পাইতেন না। দোষষ্ট হউক, বা গুণই হউক, লোকের সাধারণ প্রকৃতি । grał

  • রামগতি ন্যায়রত্ন প্রণীত সাহিত্য বিষয়ক প্ৰস্তাব । ২৭১ পৃষ্ঠা ।