পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/৬৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষজীবন । (GSS পৈতৃক সম্পত্তির উপর নির্ভর করিয়া তিনি, য়ুরোপ-প্ৰবাসকালের ব্যয় নির্বাহাৰ্থ, খািল করিয়াছিলেন, তাহার সমস্ত বিক্রিয় করিয়াও তাহার ঋণ পরিশোধিত হয় নাই । সুতরাং ঋণভার স্কন্ধে লইয়াই তাহাকে প্ৰথম হইতে ব্যবসায়ে প্ৰবৃত্ত হইতে হইয়াছিল। এ দিকে ব্যয়ের অনুরূপ আয় ছিল না । সুতরাং মধুসূদনের ঋণ এবং সঙ্গে সঙ্গে মানসিক অশান্তিও ক্রমশঃ বদ্ধিত হইতে লাগিল । কেবলই যে উচ্ছঙ্খলতায় অথবা বিলাসিতায় অর্থব্যয় হইত, তাহা নয় ; অনেক সদনুষ্ঠানেও তিনি মুক্তহস্তে অর্থ সাহায্য করিতেন। অর্থের প্রতি র্তাহার বিন্দুমাত্ৰও মমতা ছিল না ; স্বৰ্গীয় মনোমোহন ঘোষ মহাশয় বলিতেন যে, কাহাকেও সাহায্য করিবার সময়, মধুসুদন কখনও গণনা করিয়া টাকা দিতেন না । একমুষ্টিতে বা দ্বিমুষ্টিতে যাহা উঠিত, তাহা দিয়া প্ৰাৰ্থীকে বিদায় করিতেন । এরূপ ব্যক্তির পরিমিত অর্থে সন্ধুলিন হওয়া সম্ভবপর নয়। যতক্ষণ কিছু সম্বল থাকিত, সৎকাৰ্য্যেই হউক, আব্ব অসৎ কাৰ্য্যেই হউক, ধূলিমুষ্টির ন্যায় মধুসুদন ব্যয় করিতেন ; তাহার পর,অৰ্থাভাব হইলেই, ঋণের জন্য ব্যাকুল হইয়া বেড়াইতেন । নিজের সংসারনির্বাহের জন্য, হয়ত, তিনি কিছু ঋণ করিয়া আনিয়াছেন, সেই সময় কোন দুৱসম্পৰ্কীয় আত্মীয় অথবা কোন দারিদ্র্যপীড়িত পরিচিত ব্যক্তি আসিয়া তাহাকে দুঃখ জানাইলে, নিজের দুরবস্থা সত্ত্বেও, মধুসুদন তাহাকে একবারে নিরাশ করিয়া ফিরাইয়া দিতে পারিতেন না । বাবু দ্বারকানাথ মিত্ৰ হাইকোর্টের জজ হইলে বাঙ্গালী ব্যারিষ্টার ও উকীল মাত্রই পরম আহলাদিত হইয়াছিলেন। কিন্তু মধুসুদন, অপর সকলের ন্যায়, কেবলই, মৌখিক আনন্দ প্ৰকাশ করিয়া নিরস্ত থাকিতে পারেন নাই । সমব্যবসায়ী ও বন্ধুদিগকে নিমন্ত্রণ করিয়া এক সুবৃহৎ ভোজ দিয়াছিলেন । তাহাতে যথেষ্ট অর্থব্যয় হইয়াছিল । এইরূপ কারণেও মধ্যে মধ্যে ব্যয় হইতে