পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/৬৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষজীবন । Veos অভিপ্রেত ছিল না। পরস্পরের প্রথম সন্দর্শনের দুই বৎসর পরে, উভয়েই, নিরাশ হৃদয়ে, আত্মহত্যার দ্বারা দেবীর সম্মুখে যন্ত্রণার অবসান করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন । ইহাই সংক্ষেপে মায়াকাননের বর্ণনীয় বিষয় । মধুসুদন তখন যে অবস্থায় পতিত হইয়াছিলেন, তাহাতে আত্মহত্যা দ্বারা যন্ত্রণার অবসান করিবার ইচ্ছাই তাহার হৃদয়ে দিবারাত্ৰি জাগরন্ধক থাকিত। সেই জন্য র্তাহার রচিত গ্রন্থেও তাদৃশ ভােব পরিবােক্ত হইয়াছে। যে অবস্থায়, এই সময়, মধুসুদনকে দিনপাত করিতে হইত, এবং যে *অবস্থায় তিনি মায়াকানন রচনা করিয়াছিলেন তাহা চিন্তা করিলে ব্যথিত হইতে হয়। রোগের যন্ত্রণায়, কখনও কখন, তিনি মূৰ্চিত হইয়া পড়িতেন ; রক্ত-বমনে শবীর মধ্যে মধ্যে অবসন্ন হইয়া আসিত ; অথচ তাহারই মধ্যে অর্থাভাব ক্লেশ কথঞ্চিৎ দুৱীভূত হইবে ভাবিয়া, লেখনী হস্তে যখন যে ভাবটী হৃদয়ে উদিত হইত, তাহা লিপিবদ্ধ করিতেন । নিজের যখন লেখনীধাবণের সামর্থ্য না থাকিত, তখন কোন বন্ধু বা পরিচিত ব্যক্তি নিকটে থাকিলে, তাহার দ্বারা অভিপ্ৰেত বিষয় লিখাইয়া লইতেন। এরূপ ভাবে রচিত গ্ৰন্থ কতদুব নির্দোষ বা চিত্তাকর্ষক হইতে পারে, অভিজ্ঞ ব্যক্তি মাত্রই তাহ অবগত আছেন ; সেই জন্যই আমরা বলিয়াছি যে, মায়াকাননের দোষগুণ সম্বন্ধে কোনরূপ মতামত প্ৰকাশ না করাই সঙ্গত । নাটক-রচনার সঙ্গে মধুসূদনের সাহিত্যিক জীবন আরব্ধ হইয়াছিল, নাটক-রচনার সঙ্গেই তাহা এইরূপে সমাপ্ত হইল! মায়াকানন মধুৰ সুন্দনের অন্যান্য গ্রন্থের ন্যায় বঙ্গসাহিত্যে সুপুরিচিত নয় ; কিন্তু যিনি কবির জীবনের এই সময়কার ঘটনাবলী অবগত আছেন, তিনি ইহা পাঠ করিবার সময় বুঝিতে পরিবেন যে, ইহার অনেক স্থল কবির হৃদয়ের শোণিত দ্বারা লিখিত । হায় ! প্ৰতিভার সঙ্গে চরিত্র, নীতিজ্ঞান ও সাংসারিক বুদ্ধি মিলিত থাকিলে, বোধ হয়, v))