পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8O জীবন-চরিত। ভাষায় যাহার বিন্দুমাত্রও অধিকার ছিল না, তাহার পক্ষে এরূপ মন্তব্য প্ৰকাশ করা যে কতদূৱ খৃষ্টতার কাৰ্য্য হইয়াছে, তাহ সহজেই অনুমান করা যাইতে পারে। সুপ্ৰসিদ্ধ মুসলমান কবি ফর্দ সী, গজনী রাজসভা সম্বন্ধে বিন্দ্রপ করিয়া, বলিয়াছিলেন ;—“গজনী রাজসভা মহাসমুদ্রের তুল্য, কিন্তু কেহ কখন তাহা হইতে মুক্ত প্ৰাপ্ত হয় না”। আলেকজান্দর ডফ, ফৰ্দ্ধসীর সেই কবিতার অনুকরণ করিয়া, বলিলেন ; “প্ৰাচ্য ভাষা সমূহও সমুদ্রের ন্যায় মহান, অতল, এবং আকুল ; কিন্তু বহুদিন অন্বেষণ করিয়াও আমি কখন ইহাতে মুক্তা দেখিতে পাইলাম না।” ডাফের ও মেকলের এই সকল কথা নুতন ইংরাজী-শিক্ষিত সম্প্রদায়ের নিকট বড়ই উপাদেয়। বলিয়া বোধ হইল । তাহারা সত্য সত্যই মনে করিলেন, ংস্কৃত সাহিত্যে শিক্ষণীয় কিছুই নাই ; ইহা কেবলই কুশ। তৃণের গুণাগুণে এবং ঘূতি, দুগ্ধ ও দধি সমুদ্রের বর্ণনাতেই পরিপূর্ণ। এই বিশ্বাস অনুসাবে তাহারা, রামায়ণ, মহাভারত এবং ভগবদগীতায় মুক্ত না পাইয়া, ইলিয়াডে, ইনিয়াডে, এবং ফিল্ডিংএর উপন্যাসে মুক্ত অন্বেষণে প্ৰবৃন্ত হইলেন । সংস্কৃতজ্ঞ ব্ৰাহ্মণ পণ্ডিতগণ অতি কৃপাপাত্র, এবং সংস্কৃত সাহিতােব অনুশীলন নিতান্ত নিৰ্ব্বদ্ধি তার পরিচায়ক, এই তাহাদিগের প্ৰতীতি জন্মিল । স্বদেশীয় কাব্য, পুরাণাদিতে অভিজ্ঞতা লাভের চেষ্টা কবা দুরে থাকুক, সে সম্বন্ধে কোনরূপ জ্ঞান না থাকাই যেন তাহাদিগের পক্ষে গৌরবকর বোধ হইল। তাহারা আকিলিসের অথবা আগামেমননের উৰ্দ্ধতন সপ্তম পুৰুষের নাম বলিতে পারিতেন, কিন্তু মহারাজা ধৃতরাষ্ট্র যুধিষ্ঠিরের পিতৃব্য কি প্রপৌত্র জিজ্ঞাসা করিলে নিৰ্ব্বাক হইয়া থাকিতেন। সেক্সপিয়রের বা মিল্টনের গ্রন্থের কোন স্থলে কি আছে, তাহা তাহাদিগের জিহবাগে বিরাজ করিত, কিন্তু বনপর্বে রামচন্দ্রের বনবাস কি যুধিষ্ঠিরের নির্বাসন লিখিত আছে, কেহ জিজ্ঞাসা করিলে বিপদ বোধ করিতেন । বেদব্যাসের ও বাল্মীকির ভাষারই যখন এই দুৰ্দশ