পাতা:মাঘোৎসবের উপদেশ - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘোৎসবের উপদেশ আমাকে জিজ্ঞাসা কর আমি আজ কি করিব, তাহা হইলে বলি, আমি আজ কঁাদিব এবং হাসিব । শরৎকালে যেমন এক-একদিন আকাশের একদিকে রৌদ্র এবং অপরদিকে বৃষ্টি দেখিতে পাও, সেইরূপ আমিও আজ এক চক্ষে কঁাদিব ও অপর চক্ষে হাসিব । শিশু যেমন কঁদিতে কঁাদিতে হাসে এবং হাসিতে হাসিতে কঁাদিয়া থাকে, আমিও আজি সেইরূপ হাসিকান্না মিশাইব। যদি জিজ্ঞাসা কর, সে কি প্ৰকারি ? যদি হাসিব তবে আবার কঁাদিব কেন ? এবং যদি কঁাদিব। তবে আবার হাসিব কেন ? ইহার কিছু তাৎপৰ্য আছে। একজন দরিদ্র কৃষকের বিষয় স্মরণ কর । সে ব্যক্তি যেখানে নিজ পর্ণকুটীরে বাস করিতেছে, চল সেই স্থানে যাই। এই ভারতের কৃষকের ন্যায় দরিদ্র কে আছে ? তাহার গৃহে গিয়া কি দেখিতেছি ? সেখানে দরিদ্রতার ভীষণ মূতি। উদরে অন্ন নাই, স্ত্রীপুত্রের গাত্রাবরণ নাই, গৃহে হয়ত আচ্ছাদন নাই । ইহার উপরে ধনীর দৌরাত্ম্য। তাহার পরিশ্রমের অন্ন সুখে উদারস্থ হয় না। প্ৰহারে, অত্যাচারে, উপদ্রবে। তাহার চিন্তাকুল প্ৰাণ জর্জরিত হইয়া রহিয়াছে। বল দেখি, এই দৃশ্যের মধ্যে কি দেখিতেছি ? সেখানে কি হাস্যের ছবি দেখিতেছি, না, ক্ৰন্দনের ছবি দেখিতেছি ? সকলেই বলিবে, সেখানে ক্ৰন্দন, সেখানে অশ্রুপান্ধত ও হাহাকার। কিন্তু প্ৰাতে সেই কৃষক যখন স্বীয় ক্ষেত্ৰাভিমুখে গমন করিতেছে, তখন সেখানে গিয়া। আর এক ছবি দশন কর । সে যখন আপনার ক্ষেত্রের পাশ্বে গিয়া দাড়াইল এবং মৃদু সমীরণে ঈষদান্দোলিত শস্যের অন্ধুরগুলির প্রতি দৃষ্টিপাত করিতে লাগিল, তখন কোথা হইতে তাহার সেই চিরমলিন ঘনবিষাদপূর্ণ মুখেও প্ৰসন্নতার উদয় হইল। সে চিত্ৰপুত্তলির ন্যায় হৃদয়ের প্রিয় শস্যক্ষেত্রের দিকে চাহিয়া নিজের অজ্ঞাতসারে হাস্য করিতে R