পাতা:মাঘোৎসবের উপদেশ - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘোৎসবের উপদেশ যৌবনের ঔদ্ধত্য এত যে, সে কোথায় যাইবে, কি খাইয়া থাকিবে, বিদেশে কিরূপে চলিবে, এ সকল চিন্তাও তাহার হৃদয়ে একবার উদিত হইল না। মধ্য রাত্রে সমুদয় বসুমতী যখন অন্ধকারে আচ্ছন্ন, পরিজন যখন নিদ্রিত, রাজপথে যখন জন প্রাণীর সঞ্চার নাই, সেই ধনিসন্তান এরূপ সময়ে জাগ্রত হইয়া পিতার গৃহ ত্যাগের জন্য বদ্ধপরিকর হইল । দ্রব্যসামগ্ৰী অধিক লইলে পথে যাইতে অসুবিধা, সুতরাং সে একবস্ত্ৰ হইয়াই গৃহ ছাড়িল । ধনীর দ্বারে দ্বারবান সর্বদা জাগ্রত, যুবাপুরুষ দ্বারে উপস্থিত হইবামাত্র দ্বাররক্ষী পুরুষ জানিতে পারিল এবং তাহার গতিরোধ করিতে লাগিল । পিতার দাসদাসীর দ্বারা গতিরোধ হয়। ইহা গর্বিত সন্তানের প্রাণে কখনই সহ্য হয় না, সে ক্রুদ্ধ হইয়া দাসদাসীদিগের প্ৰতি তর্জন-গর্জন আরম্ভ করিল । তখন দ্বারবান তাহাকে দ্বারে দণ্ডায়মান রাখিয়া অবিলম্বে স্বীয় প্রভুর আদেশ জানিবার জন্য তঁহার নিকট আসিল । পিতা বলিলেন, “আমি আমার পুত্রের স্বাধীনতার পথে অন্তরায় হইব না। বলিয়া প্ৰতিজ্ঞা করিয়াছি, অতএব আমি আজ তাহাকে বাধা দিব না। আমার একমাত্র পুত্ৰ আজি গৃহ ছাড়িয়া যায়, আমি লুঝিতেছি ; আমার মর্মস্থানে আজ ব্যথা লাগিতেছে, কিন্তু আমি বাপা দিব না । দাও, তাহাকে যাইতে দাও । আমার এই দুঃখ রহিল, নিরপরাধে পুত্র আমাকে অত্যাচারী পিতার ন্যায় ত্যাগ করিয়া গেল।” দ্বারবান আসিয়া দ্বার খুলিয়া দিল। ধনিসন্তান গৃহ হইতে বহির্গত হইয়া উল্লসিত অস্তরে যেদিকে দৃষ্টি যায় সেই দিকে চলিল । কোথা যায় জানে না-কিন্তু নূতন স্থানে যাইব, নূতন আনন্দ লাভ করিব, এই আশাতেই প্ৰধাবিত হইল। V