পাতা:মাঘোৎসবের উপদেশ - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্যাগেনৈকেনামৃতত্বমানশুঃ বলিলেন, “দশজন, দশজন ।” তখনও কেহ আসিল না। তখন গুরু গোবিন্দসিংহ বলিলেন, “দশজন না হয়, পাচজন এস।” যখন পাঁচজনও আসিল না, তখন গুরু গোবিন্দ অস্থির হইয়া উঠিলেন । নিরাশায় উত্তেজিত কণ্ঠে বলিলেন, “শিখধর্মের জন্য মাথা দিতে পারে এমন একজন লোকও কি নাই ? শিখধর্ম গেল যে ! শিখধর্মের রক্ষার জন্য কেহ কি প্ৰাণ দিতে পার না ?” তখন একজন সরলমতি জাঠ দণ্ডায়মান হইল। গুরু গোবিন্দ সিংহের ন্যায় লম্ফ দিয়া তাহার চুল ধরিয়া টানিয়া লইয়া চলিলেন। নিকটে এক তাবু ছিল, তাহার মধ্যে লইয়া গিয়া তাঙ্গাকে সজ্জিত পালঙ্কে বসাইলেন, বসাইয় তাহার পদধূলি লইলেন, তাবুর ভিতরে তাঁহাকে বসাইয়া রাখিয়া একটা ছাগ কাটিলেন, তাহার রক্ত গড়াইয। তঁাবুর বাহিরে চলিল। তখন সেই রক্তাক্ত তরবারি হস্তে লইয়া বাহিরে গিয়া বলিলেন, “আর চারিজিন চাই, আর চারিজন হইলেই হইবে।” সমবেত লোকেরা সেই রক্তাক্ত তরবারি ও রক্তের ধারা দেখিয়া অনুমান করিল সেই ব্যক্তিকে কাটা হইয়াছে। এইবার গুরু গোবিন্দসিংহের আহবান শুনিয়া আর-একজন অগ্রসর হইল, তাহাকেও ঐরূপ চুলে ধরিয়া তাবুর ভিতর লইয়া পালঙ্কে বসাইলেন, তাহারও পদধূলি লইলেন, এবং পূর্বের ন্যায় আর-একটি ছাগ কাটিলেন । এইরূপে পাচাবারে পাঁচজন লোক তাহার আহবান ধ্বনি শুনিয়া জীবন দিতে অগ্রসর হইলেন। তিনি তাবুর ভিতরে সেই পাচজনকে একত্ৰ করিয়া তাহাদিগকে আলিঙ্গন করিলেন ও বলিলেন, “আজি হইতে তোমরা প্ৰত্যেকে গুরু গোবিন্দসিংহ, আজি হইতে আমরা ছয়জন গুরু গোবিন্দসিংহ হইলাম।” এই ছয়জন গুরু গোবিন্দসিংহের দ্বারাই শিখধর্ম জীবন পাইল। এই ছয়জনের জীবনই সমগ্ৰ শিখমণ্ডলীর মধ্যে জীবন উৎপন্ন করিল। Գ Տ