তখন নাগা তাকে চিনতে পারল। বিড়িতে টান দিয়ে একজন এমনিভাবে ধোঁয়া ছাড়ত।
তারপর ঘটল ভারি একটা খাপছাড়া ব্যাপার। ধীরে ধীৱে একটি লঞ্চ এসে গাধাবোটের গায়ে ভিড়ল। জল পুলিশের লঞ্চ। লঞ্চ থেকে চার-পাঁচজন পুলিশ লাফিয়ে পড়ল গাধাবোটে এবং একটা পাকা গুদামঘর থেকে বেরিয়ে আরও চার-পাঁচজন পুলিশ গাধাবোটের ঠিক উপরে ডাঙ্গায় এসে দাঁড়াল। তারপর খানিক হট্টিগোলের পর জল পুলিশের দারোগার সামনে খোলা হল একটা তামাক পাতার গাট। তামাক পাতা পাওয়া গেল বটে। কিন্তু দেখা গেল তামাক পাতার নীচে শুধু সিদ্ধি পাতা।
পূর্ববঙ্গের কোন কোন অঞ্চলে বিনা চাষেই আগাছার মত-লিঙ্গস্ত্র সিদ্ধিগাছ জন্মায়, মানুষের ঘরের পিছনে থাকে সিদ্ধি গাছের জঙ্গল। আইন আছে যে যেখানেই সিদ্ধিগাছ জন্মাক সেটা গবর্ণমেণ্টের সম্পত্তি, কিন্তু ঘরের পিছনের জানলা দিয়ে হাত বাড়িয়ে সিদ্ধিপাত ছিড়ে লোকে সরবৎ করে খেলে তো আর আইন খাটানো যায় না। আইন খাটানো চলে তখন, কেউ যখন তামাক পাতা ঢাকা দিয়ে রাশি রাশি সিদ্ধিপাত সে দেশে চালান দেবার চেষ্টা করে যেখানে এভাবে সিদ্ধিগাছ গজায় না।
দেখতে দেখতে সেখানে মানুষের ভিড় জমে গেল, নৌকা ফেলে মাঝিরা ছুটে, এল ব্যাপার দেখতে। নাগা একবার মুখ ফিরিয়ে তাকাল, জেটির দিকে। কুর্তপরা সে লোকটি সেখানে নেই। চারদিকে তাকিয়ে নাগা তাকে খুজে বার করবার চেষ্টা করল, কিন্তু লোকটি আর তার চোখে পড়ল না।
সে নকুল মাঝির ছেলে পঞ্চু।
ছয়
একটা দিন সদরে কাটিয়ে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ধীরে ধীরে লঞ্চ চালিয়ে চাঁদপুরের দিকে যেতে যেতে হঠাৎ মত বদলে যাদববাবু গেলেন নারাণগঞ্জে। সেখানে তিনদিন পরামর্শ করলেন তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে, তিনি বড় একটি