করা যেতে পারে। সেকালের দিনে যদি এখনকার মতো তীক্ষ্ণদর্শী ক্রিটিক-সম্প্রদায় থাকত, তা হলে কালিদাসকে মহা জবাবদিহিতে পড়তে হত, তা হলে এই ক্ষুদ্র সোনার তরীটি লিরিক ড্রামাটিক ডেস্ক্রিপ্টিভ প্যাস্টোরাল প্রভৃতি ক্রিটিক্দের কোন্ পাহাড়ে ঠেকে ডুবি হত বলা যায় না। আমি এই কথা বলি, যক্ষের পক্ষে কবির আচরণ যেমনই হোক, আমার পক্ষে ভারি সুবিধে হয়েছে। ক্রিটিকের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত হয়ে বলছি dramatic হয় নি। কিন্তু, আমার বেশ লাগছে। আমার আর- একটা কথা মনে পড়ছে— যে সময়ে কালিদাস লিখেছিল সে সময়ে কাব্যে-লিখিত দেশ-দেশান্তরের নানা লোক প্রবাসী হয়ে উজ্জয়িনী রাজধানীতে বাস করত, তাদেরও তে বিরহব্যথা ছিল। এইজন্য অলকা যদিও মেঘের terminus, তথাপি বিবিধ মধ্যবর্তী স্টেশনে এই-সকল বিরহী হৃদয়দের নাবিয়ে দিয়ে দিয়ে যেতে হয়েছিল। সে-সময়কার নানা বিরহকে নানা দেশ-বিদেশে পাঠাতে হয়েছিল, তাই জন্যে অলকায় পৌঁছতে একটু দেরি হয়েছিল। এজন্যে হতভাগ্য যক্ষের এবং তদপেক্ষা হতভাগ্য ক্রিটিকের নিকট কবির সমুচিত apology করা হয় নি; কিন্তু সেটাকে তাঁরা যদি public grievance বলে ধরেন, তা হলে ভারি ভুল করা হয়। আমি তো বলতে পারি, আমি এতে খুশি আছি। বর্ষাকালে সকল লোকেরই কিছু না কিছু বিরহের দশা উপস্থিত হয়, এমন-কি, প্রণয়িনী কাছে থাকলেও হয়; কবি নিজেই লিখেছেন-
মেঘালোকে ভবতি সুখিনােহপান্যথাবৃত্তি চেতঃ
কণ্ঠাশ্লেষে প্রণয়িনিজনে কিং পুনর্দূরসংস্থে।
অর্থাৎ, মেঘলা দিনে প্রণয়িনী গলায় লেগে থাকলেও সুখী লোকের মন উদাসীন হয়ে যায়, দূরে থাকলে তো কথাই নেই। অতএব কবিকে বর্ষার দিনে এই জগদ্ব্যাপী বিরহীমণ্ডলীকে সান্ত্বনা দিতে হবে, কেবল