পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/২৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

शङौ নয়, সরসও নয়। কেষ্টবাবুর ঈর্ষাতুর মুখের দিকে এক নজর চাহিয়া জ্যোতিৰ্ম্ময়ের পূজায় পরিতৃপ্ত দেবতা উপবেশন করে। তারপর অনাথ আসিয়া জোটে। নিজের ঘরে না গিয়া সত্যপ্ৰিয় জ্যোতিৰ্ম্ময়ের ঘরে গিয়াছে টের পাইয়া আপিস পরিচালনায় যে ক’জন সত্যপ্রিয়ৱ ডান হাত আর বঁ হাত তারাও আসিয়া জোটে। প্ৰথমে দাড়াইয়া থাকে, বসিতে বলিলে বসে। সত্যপ্ৰিয় কথা বলে এমনভাবে যেন এ আপিসটির সঙ্গে তার বিশেষ কোন সম্পর্ক নাই, সে কেবল একজন মাননীয় অতিথি, একটু বেড়াইতে আসিয়াছে, গল্পগুজব করিতে আসিয়াছে। বাহিরের লোকের মতই এক সময় সে ভদ্রতার কুশল জিজ্ঞাসা করার মত বলে, “কাজকৰ্ম্ম চলছে কেমন আপনাদের, ঠিকভাবে চলছে তো ?’ বলিয়া মুখটা এদিকের কঁাধের সান্নিধ্য হইতে ধীরে ধীরে ওদিকের কঁাধের কাছে লইয়া গিয়া নিজেই আবার বলে, “একটু যেন চিল পড়েছে মনে হ’ল। তা হোক, তা হোক, তাই স্বাভাবিক, মাঝে মাঝে হঠাৎ দু’একটা দিন এরকম চিল পড়ে। আমাদের গ্রীষ্মপ্ৰধান দেশে স্বাস্থ্য বজায় রেখে পাশ্চাত্য প্রথায় কাজ করা বড় কঠিন, মানুষকে একেবারে যন্ত্র বানিয়ে দিচ্ছে দিনকে দিন-স্বাস্থ্য, শান্তি সব রসাতলে গেল |’ এই ভয়টাই সকলের মনে জাগিতেছিল। আজ যখন তার পিতৃশ্ৰাদ্ধ, কেহ কল্পনাও করিবে না। সে আপিসে আসিবে, অতএব আজই একবার দেখিয়া আসা যাক কাজকৰ্ম্ম কেমন চলিতেছে। সকলেই মুখ কঁচু-মাচু করিয়া ক্লিষ্ট হাসি হাসে। অনাথ বলে, আজ্ঞে হ্যা, একটু কাজে চিল পড়েছে। আজ, কারও মন বসছে না। কাজে । ওবেলা আপনার ওখানে যাবার কথা ভেবে ‘এখন ছুটি দিয়ে দিলে কেমন হয় অনাথ ? জবাব দেওয়ার আগে অনাথ এক মুহূত্তের মধ্যে সত্যপ্ৰিয়র মুখের ভাবটি অধ্যয়ন করিয়া ফেলে, তারপর দৃঢ়স্বরে বলে, “আজ্ঞে না, খেতে যাবে রাত্রে, এখন থেকে ছুটি Cቕoና ?” সত্যপ্রিয় সকলের দিকে চাহিয়া বলে, দেখলেন। আপনার ? আপিসের ওপর এতটুকু জোরও আমার নেই, একদিন হাফ হলিডে দিতে চাইলে দিতে পারি না ’ । সত্যই যেন আপিসের উপর সত্যপ্রিয়ার কিছুমাত্র জোর নাই, এইরকমভাবে সকলে নিঃশব্দে হাসিল । এভাবে হাসাই নিয়ম, কারণ এটা রসিকতা । ইচ্ছে 3ዌቅ