পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৩৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহয়তলী দিয়াছিল । তবে সেটা সাময়িকভাবে কোনরকমে কাজ চালানো গোছের সমাধান । সে সমাধান গ্ৰহণ করার বদলে সুব্রতা নিজের সমস্যার আরও স্থায়ী ও ব্যাপক মীমাংসা করিয়া ফেলিল । যশোদার কাছে টাকা ধার করার বদলে দামী চায়ের সেট কেনার মত প্ৰয়োজনগুলিকেই বাতিল করিয়া দিল ! হাসিমুখে বলিল, “প্রথমটা ঠিক বুঝতে পারিনি দিদি কন্দর হিসেব করে bब्लड श्gत अiभक ।' একটি এলুমিনামের কেটলী আর সস্ত কয়েকটি কােপডিস মাত্র কেনা হইল। আসবাব কিনিয়া ঘর বোঝাই করা তো বন্ধ হইয়া গেলই, যশোদাকে একদিন সুব্রতা জিজ্ঞাসা ও করিল, বাড়তি কয়েকটা আসবাব বিক্ৰী করিয়া ফেলা যায় না ? খরচপত্রও সে হঠাৎ কমাইয়া ফেলিল। যুদ্ধের সম্ভাবনা টের পাওয়া মাত্র বুদ্ধি থাকিলে একটা দেশ যেমন যুদ্ধের জন্য প্ৰস্তুত হয়, অদূর ভবিষ্যতে দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই বাধিবে জানিয়া সুব্রতাও যেন তেমনিভাবে নিজেকে প্ৰস্তুত করিতেছে । সুব্রতার মধ্যে ন্যাকামি নাই। তরুণ মনের স্বাভাবিক ভাবপ্রবণতা তার মধ্যে যথেষ্টই আছে কিন্তু দামও সে করিতে জানে। বাকী আলোয় চকচকে কঁচকে হীরার মত খাতির করার খেলায় হয়তো সে আনন্দ পায় এবং সে কঁাচের বিনিময়ে কিছু সোনাদানাও অনায়াসে দিয়া বসে। কিন্তু হীরার বদলে কঁাচ পাইয়াছে বলিয়া কখনো আপশোষ করে না। কারণ, কঁচ সে কঁাচ তা সে জানে, আসলে সে দাম দেয় শুধু আনন্দন্টুকুর। যশোদা এটা আশা করে নাই। সুব্রতাকে ভাল লাগিলেও এবং একটু স্নেহ জাগিলেও প্রথমটা তাকে যশোদার মনে হইয়াছিল, তুবড়ির মত উচ্ছাসভরা অকালে পাকা ফাজিল মেয়ে। তারপর ক্রমে ক্ৰমে যশোদা বুঝিতে পারিয়াছে, কথা বলা ছাড়া আর কোন বিষয়ে সে তুবড়ি-ধৰ্ম্মী নয়। ঠেকিয়া শেখা অভিজ্ঞতার পরিমাণটা তার অস্বাভাবিক রকমের বেশী নয়, কেবল দেখিয়াশেখা অভিজ্ঞতা সঞ্চায়ের স্বভাবসিদ্ধ পটুতার জন্য জ্ঞানের ভাণ্ডারটা বেশীরকম ভরিয়া ওঠায় তাকে একটু পাকা মনে হয়, আসলে মেয়েটা কঁাচাই আছে। মনকে সঙ্কীর্ণ করার অপরাধে নিজেকে অপরাধী করে নাই বলিয়া সাহস ও সরলতা তার একটু বেশী, তাই তাকে মনে হয় ফাজিল । eso