পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অহিংসা কিন্তু নিজের সামনে না ঘটা পৰ্য্যন্ত নিজের জানাশোনা মানুষের সম্বন্ধে কে তা সম্ভব ভাবিতে পারে। বিপিন দাড়াইয়া দাড়াইয়া মাথা চুলকাইতে লাগিল। সদানন্দ যা বলিতেছে তাই করাই হয় তো ভাল, তা ছাড়া আর কি উপায় আছে! ভিতর হইতে সদানন্দ বলিল, “বিপিন, গেলি ?” বিপিন বলিল, “যাচ্ছি।” ধীরে ধীরে বিপিন সদরের দরজার দিকে আগাইয়া যায়, মাথার মধ্যে তার যেন সব গোলমাল হইয়া যাইতে থাকে। দরজা বন্ধ না করিয়া খোলা দরজার সামনেই সে বসিয়া থাকে। মাথার মধ্যে তার যত গোলই পাকাইয়া যাক, এ বুদ্ধিটা তার থাকে যে, দরজা বন্ধ করার চেয়ে দরজা খুলিয়া রাখিয়া নিজে বসিয়া সকলের পথ আটকানো डॉक् । আশ্রমের একজন সামনে দিয়া যাওয়ার সময় জিজ্ঞাসা করে “এখানে বসে আছেন ?” “এমনি । উনি একজনকে বিশেষ উপদেশ দিচ্ছেন-আমারও একটু দরকার আছে ওনার vCqf ʼ বেলা পড়িয়া আসে, সামনে দিয়া আশ্রমের শিষ্য-শিষ্যার যাতায়াত বাড়িয়া যায়। কেউ কেউ বিপিনকে এখানে এভাবে বসিয়া থাকার কারণ জিজ্ঞাসা করে, কেউ দুদণ্ড দাড়াইয়া বাজে কথা বলিয়া যায়। চালার নীচে নিত্যকার সভার জন্য গ্রামবাসী নরনারী একে একে আসিয়া জমা হইতে থাকে। তৃষ্ণায় বিপিনের বুক ফাটিয়া যাওয়ার উপক্রম হয়। কিন্তু উঠিয়া গিয়া এক গ্লাস জল যে খাইয়া আসিবে, সে সাহসও হয় না, কাউকে এক গ্লাস জল আনিয়া দিতে বলিতেও ভরসা পায় না । শেষ বেলায় চালার নীচে সকলে সমবেত হইয়া অধীর আগ্রহে যখন সদানন্দের প্রতীক্ষা করিতেছে, উমা আর রত্নাবলী শশধরের বৌকে সঙ্গে করিয়া মাধবীলতার খবর নিতে আসিল ।

  • বিপিন পাংশু মুখে বলিল, “উনি মাধুর সঙ্গে কথা বলছেন।” ।

“এখনো কথা বলছেন। রত্নাবলী বলিল । বিপিন হাসিবার চেষ্টা করিয়া বলিল, “মাধুকে উনি একটু বেশী পছন্দ করেন। তা ছাড়া, অনেকবার আমায় বলেছিলেন, বিবাহিত জীবনের কৰ্ত্তব্য সম্বন্ধে মাধুকে কিছু বলবেন। সে সব কথা বলছেন বোধ হয়।” y( রত্নাবলী বলিল, “এতদিন এক বাড়ীতে থেকে --daی ۹ة a(Mal}»

  • বিপিন বলিল, “বিয়ের সঙ্গে সঙ্গে উপদেশ দিলে কি হবে ? উনি অ্যাদিন ইচ্ছে করেই কিছু বলেন নি। আজ মাধু নিজে শুনতে চাইল

“আমরাও একটু শুনে আসি বলিয়া রত্নাবলী ভিতরে ঢুকিতে যায়, বিপিন ব্যস্ত হইয়া বাধা দিয়া বলিল, “না না, যে ও না। উনি কাউকে যেতে নিষেধ করেছেন।” কিন্তু রত্নাবলীকে আটকাইবার মত গায়ের জোর বিপিনের ছিল না, তাকে ঠেলিয়া সরাইয়া দিয়া রত্নাবলী ভিতরে চলিয়া গেল । রত্নাবলীর মনটা একটু সন্দিগ্ধ। সদানন্দের ঘরের সামনে রত্নাবলী একটু দাড়াইল। সন্দিগ্ধ মনে সাহস থাকে না, থাকে কৌতুহল। দরজা বন্ধ না খোলা ? ঠেলা দিলেই যদি খুলিয়া যায় ? সদানন্দ দরজা খুলিয়া যদি জিজ্ঞাসা করে, কি চাই ? বিপদ হিসাবে কোনটাই 간지 R || সাহস যে মনে নাই, কৌতুহল দমন করার মত মনের জোর সে মনে কোথায় পাইবো ? দরজাটা ভেজানেই ছিল। गन्नन् श्रु ग्क्वि च८छ्, ° व्ञरे। দু’পাশে হাতের তালু দিয়া খাটে চাপ দিবার ভঙ্গি দেখিয়া মনে হয়। হাতের উপরেই শরীরের ভর দিয়া যেন সদানন্দ বসিয়াছে। মাধবীলতা বসিয়াছে মেঝেতে তার বুলানি পায়ের কাছেউৰ্দ্ধমুখী, উত্তেজিতা, শব্দময়ী মাধবীলতা। উপদেশ দেওয়ার কথা সদানন্দের, কিন্তু সে রীতিমত অস্বস্তির সঙ্গে মাধবীলতার বক্তৃতা শুনিতেছে। " সদানন্দের চোখে না পড়িলে রত্নাবলী হয়তো চোরের মত পালাইয়া যাইত, সদানন্দ তাকে দেখিয়াই তৎক্ষণাৎ সাগ্রহে আহবান করিয়া বসায় সে সুযোগটা আর পাওয়া গেল না। “এসে রতন।” মাধবীলতা মুখ নামাইয়া ভাল করিয়া গা ঢাকিয়া কুঁজে হইয়া বসিল। পায়ে পায়ে আগাইয়া আসিয়া রত্নাবলী তার কাছে বসিল, সন্তৰ্পণে। মনের মধ্যে তার ওলট-পালট চলিতেছিল। অৱস্থা বিশেষে কত রকম সন্দেহই মনে জাগে। “তুমি একা এসেছ রতন ? “আজো হঁ্যা । ভাবলাম যে একবার