পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

'টের পাইবে কে ? রাধিতে । রাধিতে দুখানা মাছতগজা শুষ্ঠামা শালপাতায় জড়াইয়া কাপড়ের আড়ালে গোপন করে, ঘরে গিয়া কখন সে তাহা লুকাইয়া আসে কে জানিবে ? 'এমনি সব ছোট ছোট চুরি শুষ্ঠামা করে, গোপনে চুরি করা খাবার বিধানকে খাওয়ায় । একবার খানিকটা গাওয়া। ঘি যোগাড় করিয়া সে বড় মুস্কিলে পড়িয়াছিল। রাখালের ছেলেমেয়ে ছাড়া আর সকলকে একসঙ্গে বসিয়া খাইতে হয়, আগে অথবা পরে। একা খাইলেও রান্নাঘরে খাইতে হয় ভাত, দাওয়ায় খাইতে হয়। জলখাবার, সকলের চোখের সাননে। কেমন করিয়া ঘিটুকু ছেলেকে খাওয়াইবে শ্যামা ভাবিয়া পায় নাই। বলিয়াছিল, এমনি একটু একটু খেয়ে ফ্যাল না খোকা পেটে গেলেই পুষ্টি হবে । তাই কি মানুষ পারে, কঁচা ঘি শুধু খাইতে ? শেষে মুড়ির সঙ্গে মাখিয়া দিয়া একটু একটু করিয়া শ্যামা ঘিটুকুর সদগতি করিয়াছিল। খোকার তখন বাৎসরিক পরীক্ষা চলিতেছে, একদিন সকালে শুমাকে ডাকিয়া রাখাল বলিল, জান বৌঠান, শীতলবাবুতো খালাস পেয়েছেন আট দশ দিন হল। নকুড়বাবু পত্র লিখেছেন। তোমাদের কলকাতার বাড়িতে এসেই নাকি আছে, দিনরাত ঘরে বসে থাকে কোথাও যায়お刊 alー পত্ৰখানা দেখি ঠাকুর-জামাই ? নকুড়বাবু লিখিয়াছেন শীতলের চেহারা কেমন পাগলের মত হইয়া গিয়াছে, বোধ হয় সে কোন অসুখে ভুগিতেছে, এতদিন হইয়া গেল কেহ তাহার খোঁজ খবর লইতে আসিল না দেখিয়া জ্ঞাতার্থে এই পত্র লিখিলেন। রাখাল বলিল, তোমাদের বাড়িতে না ভাড়াটে আছে বৌঠান ? শীতলবাবু ওখানে আছেন কি করে ? কি জানি ঠাকুরজামাই কিছু বুঝতে পারছি না। আপনি একবার যান না। কলকাতা ? BBD gDB sBDK DBB K gDBDBD DDD করিয়া দিল । বিধান পরীক্ষা দিতেছে, এখন এ সংবাদ পাইলে হয় ত সে উত্তেজিত হইয়া উঠিবে, ভাল লিখিতে পরিবে না।-বছরকার পরীক্ষা সহজ তো নয়। ঠাকুরজামাই, এখন কি ওকে ব্যস্ত করা উচিত ? পাগলের মত চেহারা হইয়া গিয়াছে ? অসুখে ভুগিতেছে ? বিধানের পরীক্ষা না থাকিলে শুগামা নিজে দেখিতে যাইত। কিন্তু এখানে শীতল আসিল না কেন ? লজ্জায় ? কি অদৃষ্ট মানুষটার। দু’বছর জেল খাটিয়া বাহির হইয়া আসিল, ছেলে“মেয়ের মুখ দেখিবে, স্ত্রীর সেবা পাইবে, তার বদলে খালি বাড়িতে মুখ লুকাইয়া এক অসুখে ভুগিতেছে। এত লজ্জাই বা কিসের ? আত্মীয়স্বজনকে মুখ কি দেখাইতে হইবে না ?

  • , শনিবারের আগে স্নাখালের, কলিকাতা ৰাওয়ার উপায়

মানিৰ্থ-গ্রন্থাবলী SDS KSSSDSB YLB DBB DDDB DD DBKK ভাবিল। ভাবিতে ভাবিতে আসিল মমতা । শ্যামা কি জানিত নকুড়বাবুর চিঠির কথাগুলি যে ছবি তাহার মনে আঁকিয়া দিয়াছিল। পরীক্ষায় ব্যস্ত সন্তানের মুখের দিকে চাহিয়া থাকিবার সময়ও তাহা সে ভুলিতে পরিবে না, এত সে গভীর বিষাদ বোধ করিবে ? শনিবার রাখালের সঙ্গে সে কলকাতা রওনা হইল। সঙ্গে লইল শুধু ফণীকে। বিধানকে বলিয়া গেল সে বাড়িটা দেখিয়া আসিতে যাইতেছে, কলি ফেরানোর ব্যবস্থা করিয়া আসিবে, যদি কোন মেরামতের দরকার থাকে তাও করিয়া আসিবে । -আমার কথা ভেবো না বাবা, ভাল করে পরীক্ষা দিও, কেমন ? ছোট পিসীর কাছে খাবার চেয়ে খেও ? আর বকুলকে যেন মেরো না খোকা । বাড়ি পৌছিতে সন্ধ্যা পার হইয়া গেল। সদর দরজা বন্ধ, ভিতরে আলো জ্বলিতেছে কিনা বোঝা যায় না, শীতের রাত্রে সমস্ত পাড়াটাই স্তন্ধ হইয়া আছে, তার মধ্যে শুমার বাড়িটা যেন আরও নিঝম। অনেকক্ষণ দরজা ঠেলা ঠেলির পর শীতল আসিয়া দরজা খুলিল। রাস্তার আলোতে তাকে দেখিয়া শুমা কঁাদিয়া ফেলিল। চোেখ মুছিয়া ভিতরে ঢুকিয়া সে দেখিল চারিদিকে অন্ধকার, একটা আলোও কি শীতল জালায় না। সন্ধ্যার পর ? ফণী ভয়ে তাহাকে সবলে আঁকড়াইয়া ধরিয়াছিল, অন্ধকার বারান্দায় দাড়াইয়া শ্যামা শিহরিয়া উঠিল। এমনি সন্ধ্যাবেলা একদিন সে এখানে প্ৰথম স্বামীর ঘর করিতে আসিয়াছিল, সেদিনও এমনি ছাড়াবাড়ির আবহাওয়া তাহার নিশ্বাস রোধ করিয়া দিতেছিল, সেদিনও তাহার কান্না আসিতেছিল এমনি ভাবে। শুধু, সেদিন বারান্দায় জালানো छिल भि bिोग ७क्। वन। শীতল বিড় বিড় করিয়া বলিল, মোমবাতি ছিল, সব খরচ হয়ে গেছে । রাখাল গিয়া মোড়ের দোকান হইতে কতগুলি মোমবাতি কিনিয়া আনিল। এই অবসরে শুষ্ঠামা হাতড়াইয়া হাতড়াইয়া ঘরে গিয়া বসিয়াছে, বাহিরে বড় ঠাণ্ডা। শীতলকে দুটো একটা কথাও সে জিজ্ঞাসা করিয়াছে, প্ৰায় অবান্তর কথা, জ্ঞাতব্য প্রশ্ন করিতে কি জানি শু্যামার কেন ভয় করিতেছিল। ভিতরে ঢুকিবার আগে রাস্তার আলোতে শীতলের পাগলের মত মুতি দেখিয়া শু্যামা তো কাদিয়াছিল, অন্ধকার ঘরে সে বেদনা কি ভয়ে পরিণত হইয়াছে ? রাখাল ফিরিয়া আসিয়া একটা মোমবাতি জালিয়া জানালায় বসাইয়া দিল। ঘরে কিছু নাই, তক্তপোষের উপর শুধু একটা মাদুর পাতা, আর ময়লা একটা বালিশ। মেঝেতে একরাশি পোড়া বিড়ি আর কতগুলি শালপাতা ছড়ানো। যে জামা কাপড়ে দু'বছর আগে শীতল রাত দুপুরে পুলিশের সঙ্গে চলিয়া গিয়াছিল। তাই সে পরিয়া আছে, কাপড় বোধ হয় তাহার ওই একখানা, কি যে ময়লা হইয়াছে