পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হলুদ পোড়া br( জবাব গোপাল কি দেবে ? এ তো জীবন্ত প্রশ্ন নয় যে মানুষ প্রশ্ন করতে শিখবার পর অনেককাল কেটে গিয়েছে বলেই জবাব একটা আবিষ্কৃত হয়ে থাকবে-জীবনের এ একটা সাধারণ প্রশ্ন, সাধারণ কৌতুহল। গোপাল তাই চিরন্তন যুক্তি দেখিয়ে বলল, “হয়তো উপায় আছে, মানুষ তা छcन नां ।" মানুষ কেন জানে না। এরকম কুটিল প্রশ্ন করার মত জটিল মনোবিকার সুধার জন্মে নি, সে তাই বিনা প্ৰতিবাদে প্রতিদিন রোগ হয়ে যেতে আরম্ভ করল । রোগ হতে হতে মাস দেড়েকের মধ্যে এমন রোগই হয়ে গেল যে জন্মাবার আগেই মেয়েটি তার গেল মরে। সুধা কেঁদেই অস্থির। হায়, মেয়ে মেয়ে করে পাগল হয়ে মেয়েকেই সে হারিয়ে বসল ! মাথা খারাপ না হলে মেয়ে কিনা জানার আগে মেয়ে নয় মনে করে মানুষ এমন ব্যাকুল হয় ? কদিন খুব কঁদকাটা করে সুধার মন শান্ত হবার আর স্বায়ু অবসন্ন হবায় সুযোগ পেল । তার ফলে ধীরে ধীরে এল স্থায়ী বিষাদ, যা অনেকটা পরিতৃপ্তির সামিল । পরের বার একটি মেয়ে হল সুধার। অনেকদিন পরেপ্ৰায় চারবহিব । এইখানে উনিশ বছরের ছেদ দেবার সুযোগে সুধাব মেয়ে হওয়ার সঙ্গে পৃথিবীর বোমা ফাটাফাটি সম্পর্কটা সংক্ষেপে একটু ব্যাখ্যা করি। এটা অবশ্য একটা চরম দৃষ্টান্ত কিন্তু সেজন্যে কিছু এসে যায় না। দুয়ে আর দুয়ে যে যুক্তিতে চার হয় দু’ল।াথে তার দু'লখে সেই যুক্তিতেই হয় চারলাখ । তুলনামূলকতার ঘোরপ্যাচ ছাড়া আর এর মধ্যে আর কোন বিস্ময়কর অসত্য নেই,-অতি সহজ কথা । এ যুগের চরম আর পরিণত দৃষ্টান্ত হিসাবে না ধরে সুধাকে ছেটে কেটে যদি যুগের মৌলিক আর অপরিণত দৃষ্টান্তে দাঁড় করান হয়, তবু দেখা যাবে এই সুধার এভাবে মেয়ে হওয়ার মত সেই সুধার অতি সামান্য রকম এভাবে মেয়ে হওয়ার জন্যই মানুষের দাভ আর নখে বোমার রক্তপিপাসা জেগেছিল । নখের আঁচড় আর বোমার বিস্ফোরণের মধ্যে যে পার্থক্য নেই, এই ধারণা পোষণ করাই প্ৰত্যেকের উচিত। তা না হলে তুলনামূলক ঘোরপ্যাচের ফাঁদে পড়ে মানুষ তর্ক আর হাতাহাতি করে,-কোন সময় নখ দিয়ে অ্যাচড়ায় আর দাত দিয়ে কামড়ায়, কোন সময় এক ঝাক এরোপ্লেন পাঠিয়ে বোমা বৃষ্টি 夺市西1 মন্দা একদিন সুধাকে বলল, 'মা আজি বাড়ী থেকে, সন্ধেবোলা অনাদি আসবে। বাবাকে বলতে পারবে না, তোমায় বলবে। তুমি বাবাকে বোলো।” সুধা ভয়ানক চিন্তিত হয়ে বলল, ‘অনাদি ? তাই তো ।” মন্দার মুখ গম্ভীর হল, চোখ বড় হল, দৃষ্টিতে তীব্রতা এল। ভীরু মাকে একটি আঙ্গুল দেখিয়ে বলল, “তুমি ভাবচ এখনো আমি কচি খুকীটি আছি, না ? কিছু বোবে না, কেন ভেবে মর, কি দরকার তোমার এত ভাবনার ? কাল সন্ধেবেলা সমীর আসবে-আসতে বলেছি।” সুধার বয়স • বায় পঞ্চাশে এসে ঠেকেছে, বেচে থাকার প্রয়োজনীয়তা কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে জীবনের জটিলতাগুলি সরল হতে আরম্ভ করায় ভয় পরিণত হয়েছে বুকের ধড়পড়ানিতে আর চালাকিতে পরিণত হয়েছে প্ৰায় নিৰ্ব দ্বিতায় । কিছুই যেন সহজে বোধগম্য হয় না। গল্পের মাঝখানে আমার গল্প ব্যাখ্যা করার মত মন্দাকে তাই আবার ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করতে হয়। “আমি ওপরে থাকব । সমীর এলেই অনাদির কথাটা বলবে।--বেশ হাসিমুখে বলবে, তোমাদের যেন মত আছে এমনিভাবে, বুঝলে ? তারপর সমীরকে ওপরে আমার ঘরে পাঠিয়ে দেবে বুঝলে ? সুধা কাতরকণ্ঠে বলল, “এসব তুই কি বলছিস মণ,া ? আজি আনাদি কাল সমীর- এসব কোন দেশী কাণ্ড ?” সুধার তখনকার মুখ দেখেই যে কোন বুদ্ধিমতীর রাগ করার কথা, তবু সুধার কথা শুনেই যেন হঠাৎ নিজের বিপন্ন অবস্থাটা খেয়াল করে মন্দা একেবারে ঝিমিয়ে গেল। গম্ভীর gD DDB DBS BD DBD BB DDBS D DBB gK S S EES কঁাদ হয়ে বলল, “কোন ভাবচ তুমি ? ভেবোনা। সমীরের জন্যেই তো-না বললে কোনদিন মুখ ফুটে বলবে Cउ9gदछ ि বলে সুধাকে হাত ধরে বসিয়ে তার পাশে বসে কোলে মুখ গুজে মন্দা আরম্ভ করে দিল কান্না। সুধার বুক ধড়ফড় করতে লাগল। আহা, সমীরের জন্য মেয়ে যখন তার এমন করে কঁদিছে, সমীরকে নিয়েই সে তার নীড় বাধুক। কি আসে যায় একটু যদি এক গুয়ে মানুষ হয় সমীর, অনাদির সঙ্গে কবে একটু বাড়াবাড়ি করেছিল বলে মেয়েকে যদি এতকাল একটু পীড়ন করেই থাকে সমীর ? সব ভাল যার 6°ष उठाल ।