পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SR 9 মানিক গ্ৰন্থাবলী সঙ্গে শেষ প্রশ্ন উচ্চারণ করেছিল, ওরা এগোবে না ? তখনো তো ওসমান জানত না । জীবন ওর শেষ - হয়ে এসেছে এ জগতে আর কোন কথাই সে জিজ্ঞাসা করবে না। কাউকে, এগোতে গিয়ে বাধা পেয়ে যারা থেমেছে তারা এগোবে কিনা জানতে চাইবে না । মাথায় গুলি লাগার জন্য হয়তো এ রকম হয়েছে, মস্তিষ্কের একটা অংশ আড়ষ্ট হয়ে গিয়েছে। ছোকরা ডাক্তারটি তার বর্ণনা শুনে যা বললেন, হয়তো তাই হবে, ওসমানের জানিবার কৌতুহল নেই। তার চেতনাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। এই মরণ । নিকট-আত্মীয়কে হয়তো সে ভুলে যাবে, অদ্ভুত মরণের স্মৃতির মধ্যে ছেলেটি চিরদিন বাস করবে তার মনে। নিজের মরণের দিন পর্যন্ত সে ভুলতে পারবে না ছেলেটির ব্যাকুল প্রশ্ন : *ওরা এগোবে না ?” হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে তার দেখা হয়। রসুল আর শিবনাথের সঙ্গে । রসুলের ডান হাতে ব্যাণ্ডেজ, রক্তক্ষরণের ফলে মুখ তার ফ্যাকাসে হয়ে গেছে ৷ বসে বসে বোকার মতো, গোয়ারের মতে রক্ত নষ্ট করার জন্য শিবনাথ এখনো তাকে অনুযোগ দিচ্ছিল । ওসমান ওদের চিনতে পারে দেখা মাত্র, কিন্তু নিজে যেচে কথা বলতে তার বাধ’ বাধ’ ঠেকে। ওরা তার ছেলের বন্ধু ছিল, হাবিবের বাপ বলে তাকেও চিনত, এই পর্যন্ত । ট্রামের কণ্ডাক্টর বলে চিনত। ছেলে আজ নেই, তারও কারখানার মজুরের পোষাক। কথা বলতে গেলে হয়তো দুটো এলোমেলো খাপছাড়া কথাই হবে, অর্থহীন অস্বস্তিকর সে আলাপে কাজ কি ! ওসমানের নিজের কিছু আসে যায় না। তাতে, কিন্তু ওদের অস্বস্তি সৃষ্টি করে লাভ নেই । শিবনাথ চিনতে পেরে প্রথমে বলে, “আপনি এখানে ? রসুল ক্ষীণকণ্ঠে বলে, এখন হাসপাতালে কি করছেন সাব ? আপনার কেউ কি — ?” “একটি ছেলের সঙ্গে এসেছিলাম। মাথায় গুলি লেগেছিল, মারা গেছে।” ওসমান একটু ইতস্তত করে যোগ দেয়, “আমার কেউ নয়। পাশে দাড়িয়েছিল, হঠাৎ- * ‘বাড়ি যেতে মুশকিল হবে।” “পা আছে।” 'उछ। आgछ दCग्ने ।” রমলের হাতে কি হয়েছে সব যেন জানে ওসমান এমনি ভাবে জিজ্ঞেস করে, “হােতটা বঁাচবে তো ?