পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

d) R R মানিক গ্ৰন্থাবলী পালন করেছে, তারপর আর দরকার না থাকায় কাজ পালটে দায়িত্ব নিয়েছে। রাসুলকে হাসপাতালে পৌছে দেবার। ফিয়ে গিয়ে হয়তো চা এনে দেবার ব্যবস্থা করবে। শীতে যারা রাস্তা কামড়ে বসে আছে খোলা আকাশের নীচে VDG73S t9f9Qg | - না, চায়ের ব্যবস্থা করবে না, ওসমান ভাবে লজ্জিত হয়ে । ওরকম উদ্ভট কাজ শিবনাথ করে না । সহজ স্বাভাবিক কাজই সে করে। ফিরে গিয়ে সে কি করবে ওসমান জানে না । শিবনাথের কথা সে শুনেছে রম্বলের কাছে। সব জায়গায় সব অৱস্থায় নিজেকে মানিয়ে নেবার ওর নাকি অদ্ভূত ক্ষমতা, কেবল বাইরে নয়, বাড়িতে পৰ্যন্ত । বাইরের এসব কাজ ওর বাপদাদা পছন্দ করে না, কিন্তু সংসারে সব বিষয়ে ওর পরামর্শ নিয়েই নাকি চলে তারা, বিয়ের ব্যাপার থেকে অসুখ-বিসুখে চিকিৎসার কি ব্যবস্থা করা যায় সে ব্যাপারে পর্যন্ত । শিবনাথের কথা শুনে ওসমানের মনে হয়, ঠিক কথা, ছেলেটা ওই রকমি সন্দেহ নেই। ঘটনা অঘটনে ভরপুর গভীর রাত, স্তব্ধ বিষন্ন পথে চুপচাপ পথ চলাই ছিল খাপসুরৎ । ছেড়া কিছু জড়িয়ে কুণ্ডলী পাকিয়ে পুটলীর মতো ফুটপাথে শুয়ে আছে মানুষ, মাংসের বন্ধ দোকানটার সামনে তেমনি কুণ্ডলী পাকিয়ে চুপচাপ পড়ে আছে ঘেয়ো কুকুর। কোন কি দরকার ছিল শিবনাথের কথা বলার। কিন্তু কথা যখন সে বলল, ওসমানের মনে হল, এরকম কথা না। বলে মুখ বুজে তার সঙ্গে পথ চললে ভারি অন্যায় হত শিবনাথের। রসুলের মতো ছেলে পাওয়া ভার। ডান হাতটা গেল, আপসোস নেই। সঙ্গে সঙ্গে ভাবতে শুরু করেছে ডান হাতটা গেলেও বঁ হাত দিয়ে কি করে। সব কাজ চালিয়ে নেওয়া চলবে। রসুল আমার ভায়ের মতো । কি লাগসই কথাটাই বলল শিবনাথ তার মনের কথার সঙ্গে মানিয়ে। এই রকম কথা বলার জন্যই যে উন্মুখ হয়ে ছিল ওসমান, তাকি জেনেছে শিবনাথ ? ওসমান বলে, ‘রসুল আমার ছেলের মতো।” ওসমানের কথার গতি ধরতে না পেরে শিবনাথ চুপ করে থাকে। ওসমান বলে, “সাচ্চা ছেলে, তবে দােষ ছিল একটা। ভাবত কি, রাজা বাদশা খানসা’বারা গরীবের দুঃখ ঘোচাবে, বাবুৱা বেহেস্ত বানিয়ে দেবে ওদের জন্ত। রোজ বাধত হাবিবের সাথে, ঘরে থাকলে আমি শুনতাম চুপচাপ। একদিন হাবিবকে বলেছিলাম, যে শুনবে না বুঝবে না তার সাথে অতি কথায় কাজ কি ?