পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झ्रूि УVOVO “বোকা আপনাকে কখনো ভাবিনি মাসীমা, আজ বোকা মনে হচ্ছে। আমার সঙ্গে লড়বেন বলছেন না কি ? আপনার বুদ্ধি সত্যি লোপ পেয়েছে। আমায় অপমান করুন তার মানে হয়, ও-কথা বলে নিজের ছেলেকে কত বড় অপমান করছেন বুঝতে পারছেন না ? ছেলের আপনার নীতি নেই আদর্শ নেই জীবনে, একটা মেয়ের খাতিরে নিজেকে সে চালাচ্ছে ? আমায় খুনী করার জন্য আপনার বিরোধিতা করতে যাচ্ছে, তার ব্যবহারের আর কোন মানে নেই ? নিজের ছেলেকে এমন অপদাৰ্থ কি করে ভাবলেন ? তাও যদি এতটুকু সত্যি হত। কথাটা । আপনার মনের কথা আন্দাজ করলে হেমন্তেরই ঘেন্না ধরে যাবে জীবনে। একটা ভুল ধারণার বশে আমাকে হিংসা করে অশান্তি সৃষ্টি করবেন না মাসীমা । নিজেই জলে-পুড়ে মরবেন।” স্পষ্ট রূঢ়তার সঙ্গেই সীতা কথাগুলি বলে যায়, অনুরূপাকে রেয়াৎ করার কোন প্রয়োজন বোধ করে না। কড। ভাষায় খোলাখুলি সোজাসুজি না বললে তার কথার মর্ম অনুরূপ গ্ৰহণ করতে পারবেন কি না, এ সন্দেহও তার ছিল । মেহের বাডবাডি মাকেও কোথায় নিয়ে যায় ভেবে বড় আক্ষেপ হচ্ছিল সীতার । এই সব মায়েরাই ছেলের বৌ-প্রীতির জালায় পুড়ে মরে, সব দিক দিয়ে গ্ৰাস করে রাখতে চায় ছেলেকে চিরকাল। স্নেহ যায়। চুলোয়, বড় হয়ে থাকে শুধু বিকারটা। মায়ের স্নেহও যদি এমন সর্বনেশে হয়, সে কত বড অভিশাপ মানুষের ! তাও এমন মার, অন্তঃপুরের বন্দী জীবনে অন্ধ মমতা বিলিয়ে যাওয়াই শুধু যার কাজ নয়, এক নিজের পায়ে ভর দিয়ে দাডিয়ে যে বাইরের জগতের সঙ্গে লড়াই করে আসছে পনের বছর ধরে, বাঁচবার জন্য, ছেলেমেয়ে মানুষ করার জন্য ! এমন বাস্তব যার জীবন, মা বলেই কি তার এতটুকু বাস্তববোধ জন্মায় নি ছেলেমেয়েদের বিষয়ে ? এমন জন্যই নিজেকে ছােট করে মায়ের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকে না সন্তানের । তাই কি করতে হবে হেমন্তকে ? নইলে যে সমস্যা সৃষ্টি করবেন। অনুরূপ, তার সমাধান করা কি সম্ভব হবে হেমন্তের পক্ষে । কিন্তু অনুরূপা কি সত্যই ও-রকম অশান্তি সৃষ্টি করবেন ? হেমন্ত পাস করে মোটা মাইনের চাকরি করবে, এ আশা তো ফুরিয়ে যায়নি একেবারে। অনিশ্চিত আশঙ্কাই শুধু পীড়ন করছে তাকে । শান্ত মনে সব কথা বিবেচনা করে দেখবার পরেও কি ছেলের দিকটা খেয়াল হবে না। অনুরূপার, মনে হবে না। অত বড় উপযুক্ত ছেলেকে চলা-ফেরা মতামতের এতটুকু স্বাধীনতা না দেওয়া পাগলামির সামিল ? মেহের শিকলে জোর করে হেমন্তকে হয়তো বেঁধে রাখা যাবে কিন্তু