পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিহ্ন SV). “ঘুম পেয়েছে হেমা ? ‘मां भी । कि बव्लाद दालों।' “আমাকে বলতে হবে ?” “হবে না ? নইলে তোমার মনের কথা বুঝবো কি করে ? “নতুন কথা শোনালি আজ। আমার মনের কথা বুঝিস না তুই ? কপাল আমার !” শুনে হেমন্ত ভয় পেয়ে যায়। বুঝতে পারে, অনুরূপার কাছে আজ সে সহজে রেহাই পাবে না। নইলে তিনি এ সুরে কথা শুরু করতেন না। রাগ দুঃখ অভিমান অনুযোগ অভিযোগ কঁাদা-কাটা সব কিছু অস্ত্ৰ সাজিয়ে মা প্ৰস্তুত হয়ে আছেন। আলোচনা গড়ে তুলে এগিয়ে নিয়ে যাবার ভার মার হাতে ছেড়ে দিলে আর রক্ষা থাকবে না, একেবারে মর্মান্তিক কাণ্ড করে ছাড়বেন তিনি । ভেবে-চিন্তে হেমন্ত নিজেই কথা নিযন্ত্রণের দায়িত্ব গ্রহণ করে। অনুৰূপা কি যেন বলতে যাচ্ছিলেন, বাধা দিয়ে হেমন্ত বলে, “শোন, শোন । তুমি রাগ করেছ, মনে কষ্ট পেয়েছে, তোমার ভয় হয়েছে, সব আমি জানি মা । তোমার সঙ্গে আমি তর্ক করব না । তর্কও করব না, তোমার কথার অবাধ্যও হব না । তুমি যদি বারণ কর কোন কাজ করতে, তোমার কথা আমি মেনে চলব। গোড়াতে এ কথাটা স্পষ্ট করে বলে রাখলাম । এবার আসল কথা বলে তোমার মত চাইব। তুমি হঁ। কি না বলে দিও, বাস, সেইখানে সব খতম হয়ে যাবে। আমরা আর ও নিয়ে মাথা ঘামাব না ।” অনুরূপার একটু বিব্রত বোধ করেন। এ ভাবে কথা চালাবার জন্য তিনি মোটেই প্ৰস্তুত ছিলেন না । তিনি ভাবতেও পারেননি হেমন্ত এতটুকু লড়াই করবে: না, তাকে বুঝিয়ে দলে টানবার চেষ্টা পর্যন্ত বাতিল করে দেবে গোড়াতেই, সোজাসুজি তারই ওপর সব সিদ্ধান্তের দায়িত্ব চাপিয়ে দেবে। পছন্দ হোক অপছন্দ হােক, চােখ-কান বুজে তার কথা মেনে চলতে সে প্রস্তুত, হেমন্তর এ ঘোষণায় এক দিকে হৃদয় যেমন তার উল্লাসে ভেসে যাবার উপক্রম হয়, অন্য দিকে তেমনি মতামত দেবার দায়িত্বটা যে কতদূর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে অনুভব করে দুর্ভাবনারও তার সীমা থাকে না। শুধুমা হিসাবে অন্যায় আবদার করা চলত, যুক্তি-তর্ক শূন্যে উড়িয়ে দিলেও দোষ হত না। হেমন্ত যেন সে পথটা তার বন্ধ করেছে। মা বলে তাকে আকাশে তুলেছে বটে, আছাড় খেয়ে পড়বার সম্ভাবনাও সৃষ্টি করে দিয়েছে সেই সঙ্গে ।