পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S 88 शांनिक थंशांदळेौ প্ৰতিজ্ঞার বিদ্রোহে অকস্মাৎ সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে জীবনে- কঠিন, কঠিন এ কাজ। কিন্তু অন্য এক ভয়ঙ্কর নেশাতে একেবারে সচেতন অচেতন মন নিয়ে মশগুল হওয়ার মজাও টের পেয়েছে অক্ষয়, বঁাচার জন্য বঁচবার জন্য গুলির সামনে বুক পেতে দিয়ে মরা। এই প্রথম ও নতুন নেশা এত সাফ করে দিয়েছে তার মাথা যে সে জেনে গিয়েছে মদ হয়তো সে খাবে দু’একবার নিজের দুর্বলতায় কিন্তু সেটা দু’ একবারের বেশী আর খাবে না, কারণ, ফেনিল গ্লাসে চুমুক দিতে গেলে তার মনে হবে সে জীয়ন্ত তাজা ছেলের রক্ত খাচ্ছে- গোঁজানো রক্ত । এমনিভাবে উদ্ভট প্রক্রিয়া চলে অক্ষয়ের মনের। -তবে পরম মুক্তির, মহান আত্মজয়ের, দুঃস্বপ্নের অবসানের বাস্তব, কাৰ্যগত জীবন্ত অনুভূতিও আজ খুব প্রবল অক্ষয়ের। মিথ্যা ধারণা ভেঙে দিয়ে সুধার মৃত্যু-স্নান মুখে জীবনের জ্যোতি, আশার আলো ফুটিয়ে তোলার কল্পনা তার হৃদয়কে উৎসুক, উৎফুল্ল করে রেখেছে - প্ৰথম প্রেমের প্ৰিয়াকে পাওয়ার সম্ভাবনা আবিষ্কার করে ফেলার মতোই রসালে সে আনন্দ। জামা-কাপড় ছাড়তে ছাড়তে সে সুধাকে দেখতে থাকে। খাটে বসে মেঝেতে চোখ বিধিয়ে রেখেছে। সুধা । বিছানায় উঠে কেন সে শুয়ে পড়ছে না দেয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে, অক্ষয় তা বুঝতে পারে। রাত দুপুরে মাতাল অক্ষয়কে সামলাবার দায়িত্ব সুধা পালন করে এসেছে বরাবর, রাত দুপুরে বাড়ি ফিরে সে যাতে নেশার ঝোকে হৈ-চৈ কেলেঙ্কারি কিছু না করে। অক্ষয় না। শুয়ে পড়লে সে শোয় না, অক্ষয় না ঘুমোলে সে ঘুমোয় না। আজ সে মরে গেছে অক্ষয়ের কাণ্ডে, তবু আজও -তার সে দায়িত্ব পরিহার করতে সে পারছে না। হৃদয়-মনে কোটি বসন্ত আসে অক্ষয়ের । তার মনে হয়, আজ সে নেশা করায় । অপরাধ করেনি জানিয়ে কয়েক বছরের পুরানো বৌকে সে খুন্সী করবে না, আমি তোমায় ভালবাসি বলে এই আশাহীনা লজ্জিত অপমানিত মেয়েটিকে সে আজ পুলকিত রোমাঞ্চিত করে তুলবে। আজ তাদের আবার বিয়ে হবে নতুন করে। “মা কি ঘুমিয়ে পড়েছেন সুধা ?” “কি জানি।” “বোসে । এখুনি আসছি।” “কোথা যাবে ? সুধা আর্তনাদ চেপে বলে। “মাকে প্ৰণাম করে আসি।” বলে অক্ষয় ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ে। বারান্দার কোণ ঘুরলেই মার শোবার ঘরের দরজা-মা আর অক্ষয়ের বোন ললিতা শোয় ও-ঘরে । বারান্দার কোণটা