পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিহ S8) গেল মরে! ওর নাম-ঠিকানা-পরিচয় আবিষ্কার করতে গিয়ে এখন বেরিয়ে পড়বে তারা চোরা মাল চালান ! হাসপাতালে কে তাকে খাতির করে ? কে অনুভব করবে যে ব্যাপারটা চাপা দেওয়া দরকার ? হয়তাে হৈ-চৈ পড়ে যাবে। হয়তো কোন উপায় থাকবে না। তাকে টানাটানি না করে। নিজেদের বঁাচাবার জন্য বাধ্য হয়ে হয়তো তাকেই বলি দেবে বড় কর্তারা, যাদের হাতে নোট পাবার হাত চুলকানি শাস্ত করতে তার প্রাণান্ত । কিছুই হয়তো হবে না তার শেষ পর্যন্ত, সামলে নিতে পারবে। কিন্তু দাশগুপ্তের বিদ্যুৎ লিমিটেড থেকে রেডিওর বাক্সে চোরাই বিলেতী মদ চালান যায় এটা প্ৰকাশ পেলে অপদস্থ হতে হবে তো তাকে । কিছু কি করা যায় না ? সামলানো যায় না। আগেই ? এত গণ্য-মান্য ক্ষমতাবান লোকের সঙ্গে তার খাতির, আগে থেকে চাপা দিয়ে দেওয়া যায় না ব্যাপারটা ? দাশগুপ্ত ডাকে, ‘চন্দর !” ‘চন্দ্ৰ ওপরে বাৰু।” “ডেকে দে। শীগগির।” দাশগুপ্তের পরম বিশ্বাসী ধূর্তশ্রেষ্ঠ চন্দ্র এসে দাঁড়ায়। মাঝবয়সী ঈষৎ স্থূলকায় মানুষটা মুখখানা গোলাকার। আই-এ পর্যন্ত পড়েছিল, বুদ্ধিটা তাতে শাণিত হয়েছে। তিনতলা এক রকম সেই চালায়, বড়লোক, মাঝারিলোক সবাইকে খুন্সী রাখে এবং যার কাছে যত বেশী সম্ভব খসিয়ে নেয়। হিসাব রাখে, অন্য চাকরদের হুকুম দেয়, সম্রান্ত ঘরের যে মেয়ের শিকার খুঁজতে আসে, তাদের প্রয়োজন মতো বিনয়ে ও সসম্মানে অলঙ্ঘনীয় নির্দেশ দেয়, আবার দরকার হলে প্যাট্রিনের সোডার বোতল নিজ হাতে খুলে দেওয়া থেকে পা-ও চাটে । দাশগুপ্ত কিছু বলার আগেই সে শুরু করে নিরুত্তেজ কণ্ঠে, ‘গণেশ ফেরেনি। বাৰু? ব্যাপারটা বুঝতে পারছি না। মাল শুধু পৌছে দেবে, ওর হাতে টাকা দেবার তে কথা নয় ! টাকা হাতে পেয়ে লোভের বসে পালাতে সে বরং সম্ভব ছিল, মাল নিয়ে পালাবার ছোকরা তো ও নয়।’ সন্দ্রের সঙ্গে পরামর্শ করবে ? মনে মনে কথাটা নাড়াচাড়া করে দাশগুপ্ত। চন্দ্ৰ তার মস্ত সহায়, মানুষ চিনতে ও ওস্তাদ, এমন কি গণেশের মতো তুচ্ছ লোককে যে শুধু একতলায় দোকানের কাজে রাখতে হবে, তেতলার ব্যাপার টের পেতে দেওয়া চলবে না, এ পরামর্শও সেই দিয়েছিল। সে নিজে অতটা গ্ৰাহ করেনি, ** ভেবেছিল এ ধরনের গেয়ে বোকা ছোকরাকেই তেতলার কাজে লাগানো