পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झिरु \s 響 কি ফেরা যায় ? বাড়িতে নয় একটু বকবেই ! হাজার হাজার লোকে যখন রাস্তায় নেমে এসেছে, একটি গাড়ি পৰ্যন্ত চলতে দেবে না পণ করে, সে কি করে বাড়ি 6ቐርኛ | শিশির জিজ্ঞেস করেছিল, ‘কেন গাড়ি চলবে না ভাই ? জয়ন্ত - তের বছরের জয়ন্ত, ন’ বছরের ছেলের প্রশ্নে আশ্চৰ্য হয়ে গিয়েছিল, ‘জনিস না ? গুলি করবে। কেন ? এটা আমাদের দেশ, আমরা যা খুন্সী করব। ওরা গুলি করবে। কেন ?” অশোক বলেছিল, “তাছাড়া, আমাদের স্বাধীনত চাই তো। পরাধীন হয়ে থাকিব কেন শুনি ?” মনা সায় দিয়েছিল, বাবা বলে, “আমরা নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করি, তাই স্বাধীনতা পাই না । আমরা তাই এক হয়েছি। দেখছিস না ? এই দ্ব্যাখা ।” বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করার জন্য শান্তি বাহিনীর একটি গাড়ি তিন দলের পতাকা উড়িয়ে মোড়ের মাথায় থেমেছিল, লাউড স্পীকার থেকে ভেসে এসেছিল : “সংযম হাবালে, দু’চারখানা গাড়ি পোড়ালে, অন্যায়ের প্রতিকার হবে না, স্বাধীনতা আসবে না । শান্ত হযে সকলে বাড়ি ফিরে যান, কিংবা প্ৰতিবাদ সভায় যোগ দিন । সজঘবদ্ধ আন্দোলনে দাবি আদায় করুন।” জয়ন্ত বলেছিল, “তোকে বলিনি। ঢ়িল ছুড়িস না মনা ? শুনলি তো !” তারপর তারা ফিরে এসেছে এই গলির মোড়ে। গলা শুকিয়ে গেছে তাদের 'ইনক্লাব, জয় হিন্দ, বন্দেমাতরম' চেচিয়েছে, তারা তো তুচ্ছ নয়। খিদেয় অবসন্ন হয়ে এসেছে শরীর। তবু গলির ভেতরে ঢুকে যে যার বাড়ি চলে যাবে সে ক্ষমতা যেন পাচ্ছে না। তারা । তাদের শিশু-মনের স্বপ্ন, আর রূপকথা যেন বাস্তব হয়ে দেখা দিয়েছে আজ তাদের সামনে শহরের রাজপথে, অফুরন্ত সুযোগ জুটেছে রাজপুত্রের মতো বীরত্ব দেখাবার। এ মোডের অল্প দূরে একটা লৱী পুড়ছিল। তাই দেখার জন্য তারা দাড়িয়ে থাকে। সৈন্য-বোঝাই একটি লৱী আসছে দেখা যায়, শব্দও পৌছায় এখানে। জয়ন্ত বলে দৃঢ়স্বরে, সৈন্যবাহিনীর কম্যাণ্ডারের মতো, “এই শেষবার। এদের ঔনিয়ে দিয়ে আমরা বাড়ি ফিরব। আমি যা বলব, তোমরা ঠিক তাই বলবে। ই-তিন পা এগিয়ে দাড়াই চলো। রেডি! ইনক্লাব জিন্দাবাদ! জয় হিন্দ ! বন্দে মাতরম ! ইনক্লাব,--” মনার গায়ে ঢলে জয়ন্ত রাস্তায় আছড়ে পড়ে। উঠবার যেন চেষ্টা করছে।