পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छि অনায়াসে দাশগুপ্ত তার বাপ-মা-ভাইবোনদের জানায় সে ফিরে আসবে তিন-চার দিনের মধ্যে, এতটুকু বাধে না। তার ভাব ভঙ্গিটা শুধু রাণীর কাছে একটু কেমন 6ቖite ቫርፃ ! “তবে তো মুশকিল। আমরা এখন যাই কোথা।” যাদব বলে হতাশ হয়ে। ‘কোন খবর না দিয়ে কিছু ঠিক না করে এ ভাবে এলে কেন বোকার মতো ?’ দাশগুপ্ত বলে রাগ আর বিরক্তি দেখিয়ে, কয়েক মুহূর্ত ভাববার ভান করে, তার পর যেন অনিচ্ছার সঙ্গে বলে, “এইখানেই থাকো এখনকার মতো, কি আর করা যাবে।” বলে সংযম হারিয়ে রাণীর ওপর একবার নজর না দিয়ে পারে না । রাণী বলে, “বাবা, বদ্যি মশায়ের ছেলে তো আছেন। তার কাছে গেলে সব ব্যবস্থা করে দেবেন।” যাদব ইতস্তত করে। কেশব বস্থির ছেলে থাকে হাওড়ায়, আবার সেখানে ছুটিবে এত পথ হেঁটে ! গিয়ে যদি তাকেও না পাওয়া যায়, কি উপায় হবে তখন ! দাশগুপ্ত বলে, “কোথায় যাবে। আবার, এখানেই থাকে। একটা ঘর ছেড়ে দিচ্ছি। তোমাদের।” রাণী বলে, “বাব, শোন ।” যাদব কাছে এলে চুপি চুপি বলে, “না। বাবা, এখানে থাকা চলবে না। বাবু লোক ভাল না। মোর ভরসা হচ্ছে না মোটে। শেষ কালে গোলমাল হবে, চাকরিটা যাবে দাদার ? যাদব তখন বলে দাশগুপ্তকে, “আজ্ঞে, দেশের এক ভদর লোক পত্র দিয়েছেন, আমরা তার ছেলের ওখানেই যাই। আপনার এখানে হাঙ্গামা করব না বাৰু।” “যা খুলী তোমাদের!' দাশগুপ্ত বলে। সময়টা তার খারাপ পড়েছে সত্যি দাশগুপ্ত ভাবে । ধীরে ধীরে আবার তারা পথে নেমে যায়। আবার দীর্ঘ পথ হাটতে হবে। স্টেশন থেকে এত দূর হেঁটে এসেছে, এবার স্টেশন পার হয়ে অনেক দূরে যেতে হবে। যে পথে এসেছিল সেই পথেই আবার তারা লালদীঘির দিকে চলতে আরম্ভ করে । গণেশের মা বলে, “ছুটি নিয়ে কোথায় বেড়াতে গেল। গণেশ ? মোদের জানালো না কিছু চিঠিতে, কিছু বুঝি না বাবু ব্যাপার স্যাপার।’ ‘শহরে এসে স্যাঙাৎ জুটেছে ছেলের।” যাদব বলে বাবের সঙ্গে।