পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

यांनिक @jइांदव्ौ সন্দেহে সমস্ত চিন্তা এলোমেলো হইয়া যাইতেছে। মা ও বাবার জন্য, প্ৰভা রমেশের জন্য কিছুদিন চাকরী সে করিতে পারে, কিন্তু কেন করিবে ? নিজের বিশ্বাস, আদর্শ আর নবলব্ধ প্রেরণা বলি দিয়া লাভ কি হইবে। এক ঘণ্টার মধ্যে প্ৰথম বাধার কাছেই যদি সে হার মানে, অত বড় প্ৰতিজ্ঞা করার দরকার কি ছিল ? মন ষার এমন দুর্বল, তার অত বাহাদুরী করা কেন নিজের কাছে ? খানিক আগে যে স্থির করিয়াছে সে চাকরী করিবে না, পৃথিবী রসাতলে গেলেও করিবে না, এত শীগগির তাকে বাড়ী ছাডিয়া পলাইয়া আসিতে হইয়াছে - চাকরী করিবে কি না, আর একবার ভাবিয়া দেখিবার জন্য ! সে যে সত্যই অপদার্থ, এর চেয়ে তার বড় প্ৰমাণ আর কি আছে ? \ কিছুদিনের জন্য — ? নিজের মনেই ক্রিষ্টপ সংশয়ভরে মাথা নাড়ে । কিছুদিন পরে তো আর অবস্থা বদলাইবে না, বরং সে আরও জড়াইয়া পড়িবে। আজ চাকরী আরম্ভ না করা যত কঠিন মনে হইতেছে, কিছুদিন পরে চাকরী ছাড়া তার চেয়ে ঢের বেশী কঠিন হইয়া দাড়াইবে। তবে আর একটা কথা আছে। চাকরী না করিলেই বা এখন সে কি করিবে ? বড় একটা আদর্শ সামনে খাড়া রাখিয়া চুপচাপ ঘরে বসিয়া দিন কাটাইলে তো আবু চলিবে না । নিজের জীবনকে সব দিক দিয়া সার্থক করিবার প্রতিজ্ঞ। সে গ্ৰহণ করিয়াছে, মানুষ হিসাবে তার যা প্ৰাপ্য সব সে আদায় করিয়া ছাড়িবে, জগৎকে বুঝাইয়া দিবে তার কাছে আর ফাকি চলিবে না ; কিন্তু সে সম্ভব করিবার জন্য সকলের আগে একটা উপায় তো তার খুজিয়া বাহির করা চাই ? ভাবিয়া চিন্তিয়া উপায় স্থির করার সময় অবশ্য সে পায় নাই, কিন্তু সময় পাওয়ার পরেও যদি সে স্থির করিতে না পারে ? যে পথে চলিলে নিচে নামিতে হইবে না, পিছনে হটিতে হইবে না। আগাইতে আগাইতে সার্থকতায় পৌছিতে পরিবে, সে পথ যদি খুজিয়া না পায় ? পথ খুজিয়া পাইলেও পথ ধরিয়া চলিবার ক্ষমতা যদি তার না থাকে ? গভীর বিষাদ অনুভব করিতে করিতে নিজেকে তার বড় এক আর অসহায় মনে হয়। আর নিজের মত জগতের প্রত্যেক মানুষকে এক মনে হয় বলিয়া নিজেও অখণ্ড ও অবর্জনীয় একাকীত্বের বোঝা যেন দুঃসহ হইয়া উঠে। কত লোক চলিতেছে পথ দিয়া, কত চিন্তার ঢেউ উঠতেছে প্ৰত্যেকের মনে, কিন্তু কেউ কারও চিন্তার খবর রাখে না। কত কাছাকাছি সকলের দেহগুলি, তাড়াতাড়ি চলিতে গিয়া একটি দেহের সঙ্গে আর একটি দেহের কতবার ঠোকাঠুকি হইতেছে,