পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R মানিক গ্ৰন্থাবলী মণীশ বলিল, “এমন দিশেহারা হলে কিছু হয় না, খ্রিষ্ট।” “দিশেহারা ? ? ༣ “তা ছাড়া কি ? আজি ভাবিছ, ব্যবসা করে বড় লোক হবে, পর দিন ভাবিছ জ্ঞান সঞ্চয় করা বিশেষ প্রয়োজন, আবার সখ চাপছে সমাজের দোষ ক্ৰটি সংশোধন করবে, দেশকে স্বাধীন করবে। একটা মানুষ যদি ব্যবসায়ী, বিদ্বান, সংস্কারক, রাজনৈতিক সব কিছু হতে চায়, তার কিছুই হয় না।” ‘ওরকম বলেছি নাকি ? 'একদিন এক কথায় বলনি, নানান দিনের নানা কথাবার্তায় বলেছ।” । ক্রিটুপি মৃদু হাসিয়া বলিল, “ও কিছু নয়। এ কথা সে কথা মনে হয়েছে বলেছি। কাজের বেলায় যা ধরব তাই করব।” "কি ধরবে ? করবে কি করবে না, পারবে কি পারবে না, সে কথা এখন বাদ দিলাম। কি ধরবে ঠিক করেছ, তাই শুনি আগে ? মণীশের কথায় মৃদু ব্যঙ্গের সুর ক্ৰিষ্টপের কাছে ধরা পড়িল। আগেও মণীশ এই সুরে কথা বলিত, সে ভাবিত এটা তার স্নেহার্দ্র প্রশ্ৰয় দেওয়ার ভঙ্গী । সে ছেলেমানুষ বলিয়া মণীশ এভাবে তার সঙ্গে কথা কয়। আজ তার মনে হইল, মণীশ এই ভাবে তার কাছ হইতে শ্রেষ্ঠত্বের সমর্থন প্রার্থনা করে। আপিসে তার ওপরওয়ালা নিরীহ অসহায় ও একান্ত অনুগত তাকে পিঠ চাপড়াইয়া যে ভাবে মিষ্টি সুরে কথা বলেন, তার সঙ্গে মণীশের কথা বলার বিশেষ পাথক্য নাই। ক্রিষ্টপ বিচলিত হইল না। মনের যে পরিবর্তন মণীশের মৃদু তাচ্ছিল্য অনুভব করার ক্ষমতা তাকে আনিয়া দিয়াছে, সেই পরিবর্তনই অনেক কিছু তুচ্ছ করার ক্ষমতাও তাকে দিয়াছে। সে টের পাইয়াছে মণীশের এটা দুর্বলতা। ‘कि श्रद्भद ? अभि श्री 5ीछे ।' "সেটা কি ? “আমার যা নেই, সেই সব ।” 'ওতো এক কথাই হল-তোমার যা নেই, তুমি তাই চাও। কিন্তু অভাবের শেষ নেই মানুষের, চাওয়ার শেষ নেই। দুটাে অভাব বেছে না নিলে, তুমি চাইবেই বা কি ? সব অভাব মেটে না মানুষের।” মণীশ ফস করিয়া একটা সিগারেট ধরাইয়া ফেলিল । 'জিষ্ট্রপ হাত বাড়াইয়া বলিল, “আমায় একটা দিন।' সিগারেট দিয়া মণীশ একটু বিস্ময়ের সঙ্গে তার দিকে চাহিয়া থাকে।