পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bठूहकाq RBS কয়েক মাস আগে গিরির জর হইয়াছিল, দেখিতে আসিয়া ডাক্তার নাকি তার কজি হাতড়াইয়া নাড়ী খুজিয়া পান নাই ! হয়তো নাড়ী খুব ক্ষীণ দেখিয়া মন্তব্য করিয়াছিলেন, গিরির পালস নাই। সেই হইতে গিরি সগর্বে সকলের কাছে গল্প করিয়া বেড়ায়, সে এমন আশ্চর্য মেয়ে যে তার পালস পর্যন্ত নাই। সকলের যা আছে তার যে তা নাই, এতেই গিরির কত আনন্দ, কত উত্তেজনা । রাজকুমারের কাছেই সে যে কতবার এ গল্প বলিয়াছে তার হিসাব হয় না । রাজকুমার অনেকবার তাকে বুঝাইয়া বলিয়াছে, কি ভাবে মানুষের হার্টের কাজ চলে, কি ভাবে শিরায় শিরায় রক্ত চলাচল করে — অনেক কিছু বুঝাইয়া বলিয়াছে। বোকা মেয়েটাকে নানা কথা বুঝাইয়া বলিতে তার বড় ভাল লাগে। কিন্তু গিরি বুঝিয়াও কিছু বুঝিতে চায় না। সত্যি আমার নাড়ী নেই। আপনার বুঝি বিশ্বাস হয় না ? বঁচিয়া থাকার সঙ্গে নাড়ীর স্পন্দন বজায় থাকার অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের কথাটা রাজকুমার অনেকবার গিরিকে বুঝাইয়া বলিয়াছে, কোনদিন তার হাত ধরিয়া নাড়ীর অস্তিত্ব প্ৰমাণ করার চেষ্টা করে নাই। আজ সোজাসুজি গিরির ডান হাতটি ধরিয়া বলিল, দেখি, কেমন তোমার নাড়ী নেই। গিরি বিব্রত হইয়া বলিল, না না, আজ নয়। এখন নয়। রাজকুমার হাসিমুখে বলিল, এই তো দিব্বি টিপ টপ করছে পালস। গিরি। আবার বলিল, থাক না এখন, আরেকদিন দেখবেন । গিরির মুখের ভাব লক্ষ্য করিলে রাজকুমার নিশ্চয় সঙ্গে সঙ্গে তার হাত ছাড়িয়া দিয়া তফাতে সরিয়া যাইত এবং নিজের পাকা মনের আলোতে জগতের সহজ সরল মানুষগুলিকে বিচার করিবার জন্য একটু আগে অনুতাপ বোধ করার জন্য নিজেকে ভাবিত ভাবপ্রবণ। কিন্তু গিরির সঙ্গে তামাসা আরম্ভ করিয়া অন্যদিকে তার মন ছিল না । হাসির বদলে মুখে চিন্তার ছাপ আনিয়া সে বলিল, তোমার পালস তো বড় আস্তে চলছে গিরি। তোমার হার্ট নিশ্চয় খুব দুর্বল। দেখি — ডুরে শাড়ীর নীচে যেখানে গিরির দুর্বল হার্ট স্পন্দিত হইতেছিল, সেখানে হাত রাখিয়া রাজকুমার স্পন্দন অনুভব করার চেষ্টা করিতে লাগিল। গিরির মুখের বাদামী রঙ প্ৰথমে হইয়া গেল পাশুটে, তারপর হইয়া গেল কালোটে । একে আজ গায়ে তার সেমিজ নাই, তারপর চারিদিকে নাই মানুষ । কি সর্বনাশ । rtfäv-teä )-se