পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R (R মানিক গ্ৰন্থাবলী রাজকুমারকে দেখিবামাত্র টোকা দেওয়া থামিয়া গেল। চোখে মুখে তার যে দুষ্টামি ভরা চকিত হাসি খেলিয়া গেল, বনের হরিণী হাসিতে জানিলেও তার নকল করিতে পারিত না । সোজাসুজি তাকানোর বদলে মাথা একটু কাত করিয়া কোণাকুণি রাজকুমারের দিকে তাকাইয়া বলিল, এর মধ্যে তাড়িয়ে लि ? তাড়িয়ে দিল মানে ? ও, তাডিয়ে দেয় নি ? আপনি নিজে থেকে চলে যাচ্ছেন ? আমি ভাবলাম আপনাদের বুঝি ঝগড়া হয়েছে, আপনাকে তাড়িয়ে দিয়ে রিণি বিনিয়ে বিনিয়ে दांएछ । কঁদছে। নাকি ? দিনরাত কঁাদে মেয়েটা, সময় অসময় নেই। আচ্ছা, অর্গান বাজিয়ে কঁাদে কেন বলুন তো ? এ আবার কোনদেশী কান্না ! আমি যদি কখনো কঁাদি, রিণির মত আপনার জন্যেই কঁাদি, আমাকে আবার একটা অর্গান। কিনতে হবে নাকি ? রাজকুমার মৃদু হাসিয়া বলিল, রিণিকে জিজ্ঞেস করে অগান বাজিয়ে কঁাদে কেন । খুন্সী হয়ে তোমার একটা চোখ কানা করে দেবে’খন । পুরোপুরি গম্ভীর হওয়া মালতীর পক্ষে এক রকম অসম্ভব ব্যাপার, যতটা পারে গাম্ভীর্যের ভাণ করিয়া সে বলিল, জিজ্ঞেস করিনি ভাবছেন বুঝি ? ও যে আমাকে দু'চোখে দেখতে পারে না, আমিও কখনো ওদের বাড়ী আসি না, সেটা তবে কি জন্যে ? ওদের বাড়ী এস না মানে ? এই তো এসেছ সশরীরে । আজকের কথা বাদ দিন । আজি না এসে উপায় ছিল না, কলেজ থেকে ফিরছি। দেখি আপনি সরাসরি এ বাড়ীতে ঢুকে পড়লেন। ব্যাপারটা ভাল করে না জেনে আর কি তখন বাড়ী ফিরতে পারি, আপনিই বলুন ? রাজকুমার রাগ করিয়া বলিল, ব্যাপার। আবার কিসের ? শরীরটা ভাল নেই, আজ ওর পাটিতে আসতে পারব না, তাই বলতে এসেছিলাম । মালতী দীর্ঘনিশ্বাস, ফেলার মত সজোরে একটা নিশ্বাস ফেলিয়া বলিল, তা ঠিক । শরীর খারাপ বলে যে পাটিতে আসতে পারবে না, সে নিজেই খারাপ শরীর নিয়ে খবরটা দিতে আসে বটে। বাড়ীতে যখন একটার বেশী চাকর নেই।