পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R মানিক গ্ৰন্থাবলী চালার পিছনে চিন্তামণি দাড়িয়েছিল। আঁচলের আড়াল থেকে একটা ফুড বার করে সে গৌরাঙ্গের গামছায় জড়িয়ে বেঁধে দিল, ভৎসনা করে বলল “তোমার কাণ্ডখানা কি, দুধ মাপতে বেলা কাবার হল ? এটা খাইয়ো তাকে সেই যার ব্যারাম । কাল যে জন্যে বাবার কাছে এইছিলে গো তোমরা, कि उछाला !’’ “কোথা পেলে ?” ‘বাবুর ঘর থেকে সরিয়েছি, কোথা আবার পাব ? জানাজানি হয়নি যেন বাবা, দূর করে খেদিয়ে দেবে মোকে। বৌটা কেমন আছে ? “বঁচে কি না বঁাচে ।” আপসোসের একটা আওয়াজ করে চিন্তামণি মুখখান করুণ করতে চায়। গৌরাঙ্গের মনে পাক খেতে থাকে জিজ্ঞাসা যে চিন্তামণির কাজের মানে কি। চিন্তামণির মনে দরদ আছে নিশ্চয়। অজানা অচেনা পরের বৌয়ের জন্য। নইলে কে সাধ করে চুরি করতে যায় ? অথচ মুখ দেখে আর গায়ে পড়ে কথা বলতে শুনে মনে হয়। সে যেন ভারি চালাক মেয়েমানুষ, প্যাচ আছে তার মধ্যে । তাকে আরেকটু চিনবার ইচ্ছায় গৌর শুধোয় – “তুমার ঘর কুথ গো ? শুনে চিন্তামণি মুচকি হাসে। — ‘ওটা পৌছে দাওগে যাও। আলাপ কোরো”খন পবে যখন সময় পাবে।” বলেই দমক মেরে পিছন ফিরে সে হাঁটতে সুরু করে দেয় তাড়াতাড়ি ছোট ছোট পা ফেলে হাঁটার ভঙ্গিতে। অনেকদিন থেকে সে জানে এমনি করে হাঁটার সময় কোমরের নীচে দেহের গাথুনি তার মানুষের নজর টেনে নেয়। কোনদিন তাব কোমর দুলিয়ে ইটো দেখার কপাল যদি নাই হয়ে থাকে। এ ছোড়ার, আজকে দেখুক । বাবুর মেয়ে নাচে,- কি ছাই সে নাচ’! সাপের মত হাত দুলিয়ে এপাশ ওপাশ করে হাঁটু পেতে বসে আর উঠে দাঁড়িয়ে যদি নাচ হাত ওই রোগী প্যাটিকা শরীর নিয়ে, মানুষ। তবে কাঠিকে শাড়ী পরিয়ে খুসীমত নাচত, মেয়েমানুষ চাইত না। মেয়ে নাকি আবার প্রাইজ পেয়েছে নাচ দেখিয়ে! গৌর যদি কোনদিন দেখে থাকে তার দেশের ওই মেয়ের নাচ, আজ বিদেশিনী তার শুধু চলনটা দেখুক । বুঝুক, ভগবান যাকে দ্যান তার চলার মধ্যেও কত পরাণ আকুল করা নাচ। খানিক গিয়ে চিন্তামণি মুখ ফিরিয়ে তাকায় তার ঈষৎ হাসির চটুল ভাষা নিয়ে আর গৌরাঙ্গের মুখে সেরকম জবাবী হাসির বদলে সরল मठ्छ বিহ্বলতা দেখে একটু অবাক হয়ে বাড়ী ঢোকে। মানুষ যে র্কাচ থাকে, নিজে যে সে একদিন কঁচা ছিল, কতকাল মনে পড়েনি চিন্তামণির ! নীলকণ্ঠ আৰু পটলের