পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তবে শোন। মেয়েদের দেহের গড়নের সঙ্গে মনের গড়নের সম্পর্কটা বুঝাবার, 65छे कद्धछि । ও, তাই বলে । অন্ধকারে হেঁচট খাইতে খাইতে সরসী যেন হঠাৎ আলো দেখিতে পাইয়াছে। চােখে তার উত্তেজনা দেখা দেয়, মুখ উজ্জ্বল হইয়া উঠে৷ ৷ ” রাজকুমার বলিতে থাকে, আমার মতে দেহের গড়নের সঙ্গে মেয়েদের মনের . ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ আছে সরসী। সুস্থ স্বাভাবিক দেহের কথাই বলছি। যে আবেষ্টনীতেই একটি মেয়ে বড় হোক, তার দেহের গড়নের জন্য মনের কতকগুলি বৈশিষ্ট্য থাকবেই। তোমার মানসিক ধর্মের কয়েকটা বিশেষ রূপ আছে, তুমি যদি জন্মের পরদিন থেকে অন্য একটি পরিবারে মানুষ হতে তবু এই বৈশিষ্ট্য বজায় থাকত। যেমন ধৱে, তোমার সাহস । তোমার দেহের গড়ন না বদলিয়ে কোন প্রভাব তোমার সাহস নষ্ট করতে পারত না । প্ৰকাশটা হয়তো অন্য রকমের হত । অন্য বাড়ীতে অন্য অবস্থায় মানুষ হলে তুমি হয়তো পথকে ভয় করতে, পুরুষকে ভয় করতে, বেলগাছকে ভয় করতে, মার খেয়ে কঁদিতে ভয় করতে, তবু কতগুলি দিকে সাহস তোমার থাকতই। অসুখ বিসুখ বিপদ আপদে বাড়ীর মধ্যে হয়তো একা তোমার মাথা ঠিক থাকতো, হাতে শুধু শাখা পরে তুমিই হয়তো হাসিমুখে বড়বাবুর দশহাজার টাকার গয়না পরা বৌয়ের সঙ্গে গল্প করতে, তুমিই হয়তো। — বুঝেছি, বুঝেছি। আর শুনতে চাই না। রাজু, থামো। তুমি সত্যি বঁাচালে আমায়। তোমার থিয়োরী না পাগলামি সেতুমিই জানো, ক’দিন থেকে তোমার মাথা খারাপ হয়ে যায়নি এটুকু যে বুঝতে পারছি তাই আমার ঢের! এইজন্য তুমি অমন করে তাকাচ্ছিলে আমাদের দিকে, ট্রামে বাসে আদির পাঞ্জাবী-পরা ছোড়াগুলোও যেমনভাবে তাকাতে পারে না ? কি আশ্চৰ্য মানুষ তুমি রাজু! রাজকুমারকে সরাসী চা করিয়া দিল, তিনরকম খাবার দিল। কথা বলিতে লাগিল অনর্গল । তার হাসি কথা চলাফেরা সব যেন হঠাৎ হাল্কা হইয়া গিয়াছে। কথা বলিতে বলিতে সরসী হঠাৎ জিজ্ঞাসা করিল, আচ্ছা, তোমার ও থিয়োরী কি শুধু মেয়েদের সম্বন্ধে খাটো? ছেলেদের বেলা খাটে না? শুধু মেয়েদের নিয়ে পরীক্ষা করার তোমার অত আগ্রহ কেন শুনি । চায়ের কাপে চুমুক দিয়া রাজকুমার বলিল, ছেলেদের বেলাও খাটে। নিয়ম একই। তবে পুরুষের দেহের সঙ্গে মনের সম্পর্ক অতটা ঘনিষ্ঠ নয়। দেহের গড়ন অনুসারে মনের যে বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত সেটা একেবারে চাপা পড়ে যেতে পারে,