পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

5छूक्लिां१ Só ዓ না মেটালে তুমি পাগল হয়ে যাবে, সায়ানাইড খাবে। হয়তো রাজী হতে পারে। রিণি কিছুই অস্পষ্ট রাখে নাই। কয়েকটি কথাতেই সব পরিষ্কার বুঝাইয়া দিয়াছে। যতই অসঙ্গত হােক, শুধু তার ইচ্ছার কথা হইলে নিজের নিরাবরণ দেহটি তাকে দেখাইতে রিণি রাজী হইলেও হইতে পারিত। সত্য সত্যই রাজী সে হয়তো হইত না, কিন্তু একটু দোমনা তো অন্ততঃ হইত। একবারের জন্যও মণে তো হইত কি আসিয়া যায় মানুষটার ব্যাকুল প্রার্থনা মিটাইলে ? বিমুখ করিয়া একটু আপসোসও হয়তো জাগিতা। নিজের জন্য আবেদন জানানো ছাড়া রিণির মন একটু নরম করারও আর কোন উপায় নাই। কেবল রিণির নয়, সব মেয়ের সম্বন্ধেই এই এক কথা। রিণি তাই বলিয়াছে। রাজকুমার কি কথাটা জানে না ? যুক্তির দাম মেয়েদের কাছে নাই, একটুখানি আবেগের বন্যায় বিশ্বের সমস্ত যুক্তি তর্ক উচিত অনুচিত ভাল মন্দ ভাসিয়া যাইতে পারে, এটুকু জ্ঞান কি সে সঞ্চয় করিতে পারে নাই এত দিনে ? রাজকুমার লজ্জা বোধ করে। রিণি তাকে বোকা মনে করিতে অস্বীকার করিয়াছে, বোকামি কিন্তু সে করিয়াছে সত্যই। সায়ানাইড খাওয়ার কথা বলিলে রিণি গৰ্ব বোধ করিবে: আর নিছক একটা থিওরি যাচাই করিতে তার সাহায্য চাহিলে সে বোধ করিবে অপমান, এটুকু তার খেয়াল রাখা উচিত ছিল। তাছাড়া, রিণি প্ৰত্যাশা করিয়াছিল অন্য কথা । রাজকুমার বিশ্বাস করে না রিণি তাকে ভালবাসে। তাতে কিছু আসিয়া যায় না। ভাল না। বাসিলেও ভালবাসার ঘোষণা শুনিতে কে না ভালবাসে ? এদিকটাও তার খেয়াল করা टेऊि छिल । নিজের চারকোণ ঘরে চারকোণা খাটে রাজকুমার চিৎ হইয়া পড়িয়া থাকে আর উত্তেজিত চিন্তায় ছুটিাছুটি করে তার মনে। সিলিং-এর হাত তিনেক নীচে, একটা মাকড়শ শূন্যে বুলিয়া আছে, সূক্ষ্ম অবলম্বনটি চােখে পড়ে না। কিছুক্ষণ নিশ্চেষ্ট থাকিয়া উপরে উঠতে আরম্ভ করিয়া মাকড়শাটি আরও হাত খানেক নীচে পড়িয়া যায়। রাজকুমারের ঠোঁটে হাসি ফুটিয়া ওঠে। না, দ্বিতীয় বার চেষ্টা করার চেয়ে তার ব্যর্থতাই ভাল । জীবনে আর কোন মেয়ের কাছে এ দাবী সে করিবে না । এক কাপ চা আনিয়া কালী বলে, এখন চা খেলে ভাত খাবেন কখন ? খিদে নষ্ট হয়ে যাবে। খিদে থাকলে তো নষ্ট হবে।