পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V9Rde यानिक ¢iहादढौं কজিতে বাধা ঘড়িটির দিকে চাহিয়া সময়কে যে কিছুতেই তাড়াতাড়ি পিছনে ঠেলিয়া দেওয়া যায় না, আজ যেন সে তা জানিতে পারিল প্ৰথম। অথচ মনে মনে সে কামনা করিতে লাগিল, রাজকুমারের ফিরিতে যেন দেৱী হয়। অনেক দেরী হয় । ফিরিয়া আসিতে রাজকুমারের সত্যই দেৱী হইয়া গেল। স্যার কে, এল-এর আফিস বেশী দূরে নয়, টাক্সিতে পৌছিতে রাজকুমারের পাঁচ সাত মিনিটের বেশী সময় লাগিল না। আপিসের লোকজন অধিকাংশই চলিয়া গিয়াছে, কেবল তিনজন কেরাণী তখনো ঘাড় গুজিয়া কাজ করিতেছে। নিজের ঘরে স্যার কে, এল পাইপ কামড়াইয়া খোলা জানালার কাছে দাড়াইয়াছিলেন আর ঘরের কোণে টাইপরাইটের সামনে চুপচাপ বসিয়াছিল ক্রুদ্ধ ও বিরক্ত একটি ফিরিঙ্গি মেয়ে। বয়স তার রিণির চেয়ে হয় তো বেশী নয়। কিন্তু মুখে অনেক বেশী বয়সের ছাপ। বসে রাজু। স্যার কে, এল নিজেই বসিলেন । তুমি এখনো যাও নি যে মিস রেডল ? স্যার কে, এল নিজেই তাকে অপেক্ষা কৰ্বিতে বলিয়াছিলেন, মনে ছিল না। মিস রেডল চলিয়া গেলে রাজকুমারের দিকে চাহিয়া ক্ষীণভাবে একটু হাসিবার চেষ্টা করিলেন, একটা চিঠি টাইপ করাব বলে ওয়েট করতে বলেছি, এক ঘণ্টার বেশী চুপচাপ ওয়েট করছে! একবার যে মনে করিয়ে দেবে সেটুকু সাহস নেই। খাটি ইংরেজ মেয়ে হলে, ইংরেজ কেন, বাঙ্গালী মেয়ে হলে, কখন খেয়াল করিয়ে দিত, চিঠিও টাইপ করানো হত আমার । যাকগে । মুখে যাকগে বলিলেও বাজে চিন্তাগুলিকে যাইতে দিয়া সহজে কাজের কথা কিন্তু তিনি আরম্ভ করিতে পারেন না। একমুহূর্ত চুপ করিয়া থাকিয়া আবার বলিতে আরম্ভ করেন তার এক দুঃসাহসী টাইপিষ্টের কথা, মাসের শেষে যে ওভারটাইম চার্জ করিয়া তার কাছে বিল পাঠাইয়াছিল। সঙ্গে সঙ্গে তাকে অবশ্য বিদায় দেওয়া হইয়াছিল। কিন্তু সেটা, তার দুঃসাহসের জন্য নয়। নিজের পাওনা বুঝে নেবার সাহস সকলের থাকবে, আমি তাই পছন্দ করি রাজু। তুমি তো জানো আমাকে, জানো না ? আমার প্রিন্সিপাল হল, কারো ওপর অন্যায় না করা। তাই বলে অভদ্রতাকে তো প্ৰশ্ৰয় দেওয়া যায় না । আমি তাকে অপিস টাইমের পর থাকতে হুকুম দিই নি, অনুরোধ করেছিলাম।