পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আজ কাল পরশুর গল্প wory আর এসব ঘরের মেয়ে বাগানো যায় ? তাছাড়া, উপোস দিয়ে কঙ্কাল হয়েছে, কিছুদিন ভাল খেতে দিলেই গায়ে মাংস উথলিয়ে উঠবে । শৈলকে সে আগেও দেখেছে। রূপ তার চলনসই হলেও কালাচাদের কিছু এসে যায় না। প্ৰতি সন্ধ্যায় রূপ সৃষ্টি করে দিলেই চলবে। প্ৰথম কিছুদিন অন্যে তৈরী করে দেবার পর শৈল নিজেই শিখে ফেলবে পথিকের চোখ,তুলান রূপ সৃষ্টির স্থূল রঙীন ফুলেল কায়দা । প্ৰায় কীর্তনীয়ার মোহন করুণ সুরে আফসোস করে কালাচাঁদ বলে, “আহা চুক চুক ! আপনার আদেষ্টে এত কষ্ট ছিল চক্কোত্তি মশায়।” কেশব স্তিমিত নিস্তেজ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে। দরদের স্পর্শে চােখে তার জল নেমে আসবে কালাচাঁদ তা আশা করে না, কিন্তু চােখ দু’টি একটু ছল ছল পৰ্যন্ত করল না! দেখে সে একটু আশ্চর্য ও ক্ষুব্ধ হয়। অথচ এ অভিজ্ঞতা তার নতুন নয়। কি যেন হয়েছে দেশ শুদ্ধ লোকের। সহানুভূতির বন্যা ক্ষীণ একটু সাড়াও জাগায় না। আগে হলে সমবেদনার ভূমিকা করা মাত্র এই কেশব চক্রবর্তী ছেলেমেয়েদের শোকে কেঁদে ভাসিয়ে দিত, চোখ মুছতে মুছতে নাক ঝাড়তে ঝাড়তে দুর্ভাগ্যের দীর্ঘ বর্ণনা দিত, ব্যাকুল আগ্রহে চেষ্টা করত সমবেদনাকে জাগিয়ে ফাপিয়ে তুলতে। আজ ওসব যেন তার চুলোয় গিয়েছে। সহরের আস্তানা হতে অনেক গায়ে কালচাদ আসা-যাওয়া করেছে। অনেক উজাড় গা দেখেছে। কিন্তু গায়ে বসে দিনের পর দিন গাঁ উজাড় হতে দেখেনি, নিজে ঘা খায়নি। সে কেন কেশবের নিবিকার ভাবের মানে বুঝতে পারবে ! কালাচাদি কিছু চাল ডাল মাছ তারকারী এনেছিল- একবেলার মতো। এরা অবশ্য দু’বেল তিন বেলা চালিয়ে দেবে। তা দিক। সে শুধু জিভে একটু স্বাদ দিয়ে পেট একটু শান্ত করে এদের লোভ। বাড়িয়ে দিতে চায়, পাগল করে দিতে, চায়। শৈলর জন্য সে একখানি শাড়ীও এনেছে। কাপড়খানা পরে তার সামনে এসেছে শৈলর মা ৷ শৈলর সেমিজটি প্ৰায় আস্ত আছে, ছেড়া কাপড় পরলেও তার লজ ঢাকা থাকে । কালাচান্দ নানা কথা বলে। আসল কথাও পাড়ে একসময় । ‘শৈলিকে নিয়ে যাবে ? চিকিচ্ছে করাবে ? 'अीख, ईJ ।' ‘বড় কষ্ট হয় মেয়েটার কষ্ট দেখে ।” কালাচাঁদের নারীমেধ আশ্রমিক ব্যবসা সম্পর্কে কাণাঘুষ কেশবের কাণেও এসেছিল। সে চাপা আর্ত কণ্ঠে বলে, “তোমার বাড়ীতে রাখবে ? শৈলিকে