পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তারপর ? কাণকালি গায়ের খালে একবার একটা কুমীর এসেছিল। মানুষখেকো মস্ত কুমীর। পরপর তিনটি বৌকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল গায়ের। একজন মাঝবয়সী, দু’জন তরুণী। একজন রোগ ন্যাংলা, একজন বেশ মোটাসোটা, আরেকজন ছিপছিপে দোহরা গোছের লম্বাটে। মোটা বৌটি কুমীরের পেটে গিয়েছিল একাই। অন্য বেী দু'টির একজনের গর্ভ ছিল সাত আট মাস, অন্যজনের কঁাখে ছিল ছোট একটি শিশু। তার পেটেও একটা কিছু ছিল ক’য়েক মাসের। তাকে যখন কুমীর ধরল, বাচ্চাটাকে বাঁচাবার জন্য তাকে সে যত জোরে যত দূরে পারে ছুডে দিয়েছিল । মায়ের প্রাণ তো ! কান্তি দাসের বিধবা বােন সনক বাচ্চাকে তুলে আনে। সেই শিশুর বয়স এখন পনের বছর। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটে ! টেরা বঁকা আধ। শুকনো বা হাতটা একেবারেই অকেজে, আঙ্গুল গুলি শক্ত হয়ে গেছে, বাকে না । ডান হাতে বেশ জোর আছে, বিশেষ কৰ্ম্মতৎপর নয় বটে, কারণ কোন কাজেই পটুতা অর্জন করার ধৈর্য তার নেই, কিন্তু হাতটি যেন সব সময়েই কাজের জন্য অস্থির ও চঞ্চল হয়ে থাকে, অথবা অকাজের জন্য । তার বাবা গিরিশ আবার বিয়ে করেছিল এগার মাসের মধ্যেই, কিন্তু প্ৰথম পক্ষের একমাত্র খুঁতে ছেলেটাকে মানুষ করার ক্রটি সে করেনি - স্কুলে পর্যন্ত দিয়েছে। স্কুলে গজেন ক্লাস সেভেন পৰ্যন্ত উঠেছিল। ফেল করে করেই সে ক্লাসে উঠেছিল বরবার। কিন্তু একবার ক্লাস ফোর থেকে ফাইভে উঠেছিল। ফাষ্ট হয়ে। চারিদিকে সাড়া পড়ে গিয়েছিল এই চমকপ্রদ ঘটনায়। কিন্তু শুধু ওই একবার। তার আগে বা পরে আর কখনো সে পরীক্ষায় পাস করেনি - একমাত্র ড্রয়িং-এর পরীক্ষা ছাড়া। ড্রয়িং-এ তার হাতটা ছিল পাকা । এক হাতে এত সহজে এত ভাল ড্রয়িং সে করতে পারত যে, অন্ত