পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আজ কাল পরশুর গল্প 8 আবেগের সঙ্গে ভক্তি করে বলে। তার পঙ্গু, বিকারগ্ৰস্ত জীবনেরই একটা অঙ্গ হিসাবে মেয়েটা তার জীবনে মিশে ছিল বরাবর। আছে তো আছে, এইভাবে। তার নতুন ব্যবসায়ের কঁচা মাল হিসাবে আজ মনে মনে ওকে যাচাই করতে গিয়ে মেয়েটার সম্বন্ধে বিশেষভাবে সচেতন হয়ে উঠে তার এলোমেলো ভাবনা জাগে । কেমন আকুপাকু করে মনটা নানা বিরুদ্ধ চিন্তায় । বিধবা ভায়ী রাসিকে হারাধনের আস্তানায় পৌছে দিতে পারলে কী রকম হয়। রাসি খুব রূপসী, ওকে দেখলে কথাটা সে না ভেবে থাকতে পারে না । ভাবতে গেলে আবার কেমন জালাপোড়া আর অস্থির ভাব সুরু হয় । সে কি আর সত্যি নিজের ভাগ্নীকে হারাধনের কবলে দিয়ে আসবে। কিন্তু তবু ভাগ্নীটার জন্য সে জ্বালাতন হয়ে উঠেছে। তাকে দেখলেই মন তার দাম কষা সুরু করে । হাবো তার সঙ্গেই বার হয়। অনেকক্ষণ হা করে থাকায় লাল গড়িয়ে পড়েছিল, সসপ করে একবার লাল টেনে সে মুখটা বন্ধ করে দেয়। কয়েকটা বাড়ী পরেই হাবোর বাবা দয়ালের খডের ঘর । গজেনের সঙ্গে মেয়েকে আসতে দেখে দয়াল ভ্ৰকুট করে তাকায়, কিন্তু গজেন কাছাকাছি এলে তার মুখখান বেশ অমায়িক মনে হয় । ‘তেল একটিন দিলি না বাবা ?” ‘দেব দেব । পরশু কি তরণ্ডে নিয়ে আসব সাথে ।” কোটের বা হাতটা বুলিছিল। লড়বড় করে ডগাটা পকেটে গুজে সে খাল ধারে এগিয়ে যায়। মিলিটারী, সরকারী, আধা-সরকারী আর লাইসেনী নৌকা চলছিল খাল দিয়ে। একটা নৌকাকে সে ঠাক দেয়, জানায় তার পাশ আছে। নৌকা ধারে এসে তাকে তুলে নেয়। কাটিবাজারে সমারোহ ব্যাপার। চারদিকে অস্থায়ী চালাঘরের অরণ্য, মাছির মতো মানুষের ভিড, নতুন রাস্ত কঁাপিয়ে হরদম লরীর আনাগোনা । ফাকায় পাহাড় সমান স্তৃপাকার চালের পচা গন্ধে চারিদিক মাসগুল। হারাধনকে গজেন ক্ষেস্তির ঘরে খুজে বার করে। হারাধন লোকটা বেঁটে ও বলিষ্ঠ, ঘাড়ে-গর্দানে এক করা, বয়স প্রায় পঞ্চাশ, মাথার চুলে পাক ধরেছে। এই অবেলায় মদ খেয়ে চোখ লাল করে ফেলেছে । “মাগী চাই একটা ।” গজেন তাকে খবরাখবর দেবার পর হারাধন বলে এক টোক মদ গিলে। ছোট ছেলে দিয়ে একদিকে যেমন সুবিধা আছে, অন্যদিকে তেমনি অসুবিধাও