পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

sSGfas m VO) তার নিজের চোখে জল, ধরা গলায় সে বিরজাকে তার দুঃখের কাহিনী শোনাচ্ছে। রঘু বসেছে একটু তফাতে, তাকেও শোনাচ্ছে। দুঃখের কাহিনী কোন জাতের কোন মেয়ে কোনদিন বলে শেষ করে উঠতে পারে নি। গৌর এসে পড়ায় চিন্তামণিকে থামতে হল, আঁচল দিয়ে চোেখ মুছতে হল। গৌর তাকিয়ে থাকে। চিন্তামণির দরদ আছে তার জানা ছিল কিন্তু সে যে কঁদতে পারে আজ এই মাত্ৰ যেন তার সে বিশ্বাস জন্মালো একেবারে প্রত্যক্ষ (2भs 6(2) । 'कॅछ cकन c१ll ? ‘কপালে আছে কঁদেছি।” এ জবাবে রহস্যের মুখ ঝামটা আছে। সেটা বেমানান হওয়ায় গৌর অস্বস্তি বোধ করতে থাকে। কাল পর্যন্ত চিন্তামণি তাকে তার সমস্ত দুঃখের কথাই বলেছে। এর মধ্যে এমন কি ঘটল। তার কপালে যে বলতে গিয়ে তাকে কঁদতে হচ্ছে ? “সবাতো জান, আর জিগগেস করছি কি ?” তখন গৌর বুঝতে পারে যে নতুন কিছু হয় নি, তাকে যে সব কাহিনী বলবার সময় সে শুধু অদৃষ্টকে শেপেছিল আর ভগবানকে বলেছিল মুখপোড়া, বিরজা মেয়েমানুষ বলে আজ তাকে সেই সব কাহিনী বলার সময় সে আজ কেঁদেছে। নিশ্চিন্ত হয়ে গৌর রঘুকে বলল, “তোমার কাছে এলাম রঘুদা। একটা কাণ্ড করেছি। ” ‘বটে’ ?” রঘু বলল। ‘ওমা, সিকি ।’ বলল চিন্তামণি । গৌর তার নালিশ করার কথা বলে, মেয়েরা উৎসুক হয়ে কাছে সরে আসে। বাবুর ছেলের কান্না থামাতে একটু আদর করেই চিন্তামণি বিরক্ত হয়ে তাকে একটা চড় বসিয়ে দেয় । তাতে কান্না আরও বেড়ে গেলে এদিক ওদিক তাকিয়ে কোন উপায় না দেখে সে করে কি, কাপড়ের তলে খোকার মাথাটা ঢুকিয়ে স্তনের বেঁটা তার মুখে গুজে দেয়। বিরজা মুচকে একটু হাসে। রঘু যেন আনমনে শুনে যায়, না করে কোন আওয়াজ, না দেখায় কোনরকম ঔৎসুক্য। একটু কেমন ঝিমিয়ে গেছে। রঘু আজকাল, কেমন একটু নিরাসক্ত ভাব দেখা দিয়েছে তার মধ্যে। চলতি কিছুর গতি একটু কম হওয়ার মত জীবন্ত থাকার হাজার হাজার রকমসকমগুলি আগের চেয়ে একটু শ্লথ হয়েছে - একটুখানি। দুর্গার শোক এখনো তার থাকা সম্ভব নয়, নেইও। শোক কারও চব্বিশ ঘণ্টা থাকে না ।